জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সশরীরে ক্লাস শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেকে করোনায় আক্রান্ত হলেও আক্রান্তদের কেউ মারা যাননি। গতবছরের ২১ অক্টোবর থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত আক্রান্তদের শারীরিক ধকল ও সুস্থ হয়ে ওঠার তথ্য বিশ্নেষণে জানা গেছে, তাদের শরীরে করোনার তীব্রতা কম ও অ্যান্টিবডির মাত্রা অনেক বেশি।
Advertisement
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র ও বিভাগগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২১ অক্টোবর থেকে জাবিতে সশরীরে ক্লাস শুরুর পর থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ৬০২ জন শিক্ষকদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৭০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বর্তমানে আক্রান্ত আছেন ৫২ জন।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যানুযায়ী, ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ৮৭ জন শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সেখানে র্যাপিড অ্যান্টিজেনে করোনা পরীক্ষা করেছেন। তাদের মধ্যে ৬১ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মো. শামছুল আলম খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘সশরীরে ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে তাদের কেউ করোনায় মারা গেছেন বলে আমাদের কাছে তথ্য নেই। আক্রান্তদের মধ্যে করোনার খুব বেশি তীব্রতা দেখা যাচ্ছে না। জ্বর-সর্দি, হাঁচি-কাশির মধ্য দিয়েই তারা সেরে উঠছেন। করোনার টিকা নেওয়ার কারণে হয়তো তাদের শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেড়েছে।’
Advertisement
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গতবছরের ১১ অক্টোবর আবাসিক হলগুলো খোলার সময় টিকা সনদ দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা হলে ওঠেন। এরপর কয়েক ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণাগারে টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সে হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী করোনা টিকা নিয়েছেন।
এদিকে আক্রান্তের হার বাড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ করা হবে কি না জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মুজিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে খবর পেয়েছি। তবে এই পরিস্থিতিতে আবাসিক হল বন্ধের বিষয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যদি বন্ধ করার নির্দেশ দেয় তাহলে তো বন্ধ করে দিতে হবে।’
জাবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাকিবুল হক রনি বলেন, ‘আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হয়তো হল বন্ধের চিন্তাভাবনা করতে পারে। কিন্তু এটি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। শিক্ষার্থীরা বয়সে তরুণ হওয়ায় তাদের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। হল বন্ধ হলে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফিরে যাবেন। এতে তাদের পরিবারের বয়স্করা অনেক বেশি সংক্রমণ ঝুকিতে পড়বেন।’
মাহবুব সরদার/এসআর/এএসএম
Advertisement