নিজেদের কষ্টার্জিত টাকা দ্রুত ফেরত পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ শপের গ্রাহকরা। প্রতিষ্ঠানটির কথিত পৃষ্ঠপোষক বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে অনতিবিলম্বে গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
Advertisement
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে মিরপুর-১ নম্বর গোল চত্বরে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। এসময় অন্য ই-কমার্সের মতো ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পদক্ষেপ নেওয়া ও সোহেলকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
ভুক্তভোগী গ্রাহক আফজাল হোসেন বলেন, অন্যান্য ই-কমার্সের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হলেও ই-অরেঞ্জের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর পেছনে কোনো অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে কি না জানতে চাই?
তিনি বলেন, মাশরাফি ভাইকে দেখে আমরা ই-অরেঞ্জ থেকে পণ্য ক্রয় করেছি। তিনি আমাদের কথা দিয়েছিলেন শেষপর্যন্ত পাশে থাকবেন। কিন্তু ওনাকে এখন আর পাশে পাচ্ছি না। আমাদের একটাই দাবি, সরকার যেন আমাদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করে।
Advertisement
রামপুরার বাসিন্দা রাশিদা বেগম বলেন, আমার ১০ লাখ, আর মেয়ের জামাইয়ের ৮০ লাখ টাকা ই-অরেঞ্জের বিনিয়োগ করা। আমার নিজের কোনো ছেলে নেই। ই-অরেঞ্জ থেকে বাইক কিনে মোটামুটি লাভে বিক্রি করতাম। তা দিয়ে ভালোই চলতো সংসার। এইটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমি একবারে অচল হয়ে গেছি, আমার যা ছিল সব বিনিয়োগ করছি ই-অরেঞ্জে। তিনি বলেন, আল্লাহর দোহাই লাগে আমারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যান। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আমি তার কাছে আকুল আবেদন করবো।
২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে অনলাইন শপ ই-অরেঞ্জ। গত বছরের আগস্টে টাকা নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করেন একজন গ্রাহক। এরপর টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির সামনে বিক্ষোভ করেন গ্রাহকরা। একপর্যায়ে গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালাতে গিয়ে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে গ্রেফতার হন সোহেল রানা।
পণ্য ডেলিভারি ও অগ্রিম অর্থ ফেরত না দেওয়ায় ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান কারাগারে আছেন।
এসএম/এমএএইচ/এএসএম
Advertisement