বানসুরি এম ইউসুফ
Advertisement
রাতে ঘুমানোর আগে এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর ফোন এলো। ভাবলাম, বন্ধুর সঙ্গে গপ্পসপ্প করে ফুরফুরে মেজাজে ঘুমাতে গেলে মন্দ হয় না।
ফোন রিসিভ করে হ্যালো হ্যালো করছি। কিন্তু ওপাশ থেকে রিপ্লাই নেই। বাচ্চাকে নিয়ে কুয়ারা করছে বন্ধু... ‘খাও আব্বা, বেতি বেতি খেলে তাত্তালি বলো হয়ে যাবা... ওলে ওলেলে...’
ভাবলাম, বন্ধু মনে হয় ফোন করে নাই, ভুলে চাপ পড়ে গেছে! ফোন রেখে দিতে যাবো, ঠিক তখনই বন্ধু গাল ভর্তি ভাত মুখে নিয়ে চিবোনোর ফাঁকে ফাঁকে বলে উঠলো, হ্যা.. দোস্তো.. তারপর বলো.. দিনকাল কেমন যাচ্ছে!
Advertisement
আমি আমতা আমতা করে কথা বলে যাচ্ছি। টেলিফোনে বন্ধুর ভাত চিবানোর কটকট শব্দ, ঢোক গিলার ধুরুম ধুরুম গর্জন এত অস্বস্তিকর লাগছিল, সহ্য করতে পারছিলাম না! বললাম, বন্ধু আমি ফোনটা রাখি, তুমি খেয়ে সারলে ফোন দিও।
বন্ধু তো নাছোড় বান্দা! বললো, ‘আরে কোনও সমস্যা নেই, খাইতে খাইতে গল্প করতেই তো মজা।’ বলতে না বলতেই মাছের কাঁটা চোষার বিকট শব্দ! আমার এবার ভমিটিং এর উদ্রেক হচ্ছে..!
রিস্ক না নিয়ে বাথরুমের দিকে এগুচ্ছি! বাথরুমে ঢুকতেই বন্ধুর ডাল খাওয়ার সুখ টান.... ফুরুউউউউউত! আর কন্ট্রোল করতে পারি নাই, ওয়াক করে বমি করে দিলাম!
বন্ধু বলে উঠলো, ‘কি বিষয়, তুমি কি বমি করলা?’ আমি বললাম, হ দোস্তো, সমস্যা নেই। বমি করতে করতেও গল্প করতে মজা।
Advertisement
এই বলে কমোড ফ্লাশ করলাম, তাও ফোনের স্পিকার ছেড়ে! বন্ধু বললো, ‘তুমি বাথরুমে?’ বললাম, হ দোস্তো, কমোডের ফ্লাশটা ডিস্টার্ব দিচ্ছে, ঠিক মতো ফ্লাশ হচ্ছে না। দেখি একটু লাইনে থাকো...!
এবার বন্ধু আমতা আমতা করে বললো, ‘আহারে, খাইতে বসলাম, আর এর মধ্যে এসব! উহহু!!’
বন্ধু ফোন কেটে দিলো! আমিও বাঁচলাম!
... আমরা অনেকেই ফোনের এই কার্টেসিটুকু জানি না। কোনও কিছু খাওয়া অবস্থায় অন্যকে ফোন করা, ফোনে রেখে সাইড টক করা অপর প্রান্তের জন্য খুবই অস্বস্তিকর। বিশেষ করে খাওয়া অবস্থায় ফোনে কথা বলা জঘন্য রকমের অস্বস্তিকর এবং অস্বাস্থ্যকর।
নেভার ডু ইট প্লিজ!
(দুদক পরিচালক বানসুরি এম ইউসুফের ফেসবুক পোস্ট)
এমএইচআর/এএসএম