আইন-আদালত

আগাম জামিনের পথ খোলা রেখে ভার্চুয়াল আদালতের পক্ষে আইনজীবীরা

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবারও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনার পক্ষে মতামত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি (বার অ্যাসোসিয়েশন)। তবে এক্ষেত্রে আগাম জামিন শুনানির সুযোগ রাখা এবং আদালতের পূর্ণঘণ্টা ব্যবহারের দাবি জানানো হয়েছে।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল গণমাধ্যমকে বলেন, আপনারা জানেন বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির বিস্তার ঘটছে। আমাদের কয়েকজন বিচারপতি, অনেক আইনজীবী আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেবও আক্রান্ত হয়েছেন। সমিতির অনেক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি আজ বলেছেন, আমাদের ভার্চুয়ালি যেতে হবে। এক্ষেত্রে সমিতির সদস্যদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

কাজল বলেন, আমরা সমিতির পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতিকে যেটা বলেছি, এখন যেহেতু বিষয়টি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির সঙ্গে সম্পর্কিত। মানুষের স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ অবস্থায় আদালত কীভাবে খোলা রাখা হবে সেটা সম্পূর্ণ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিষয়। সুতরাং এটার সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন স্বাধীনভাবে নেবে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক বলেন, আমাদের সহযোগিতার বিষয়ে আমরা যেটা বলেছি, বর্তমানে যেভাবে শারীরিক উপস্থিতিতে আদালত বিভিন্ন ক্ষমতা প্রয়োগ করেন তার যেন কোনোটাই খর্ব করা না হয়। ভার্চুয়াল কোর্টে একটা পর্যায় কিন্তু আগাম জামিন শুনানি স্থগিত ছিল। আমরা বলেছি এটা যেন না হয়।

Advertisement

তিনি বলেন, আগাম জামিনসহ বর্তমানে শারীরিক উপস্থিতিতে যেভাবে আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে সেভাবেই যেন পরিচালিত হয়। দ্বিতীয়ত, আদালতের যে সময়সীমা। সেটা অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ সময়সীমা যেন বিচার কাজে ব্যবহার করা হয়, সেটাও আমরা প্রধান বিচারপতিকে বলেছি।

এই আইনজীবী বলেন, এখন ওনারা সিদ্ধান্ত নেবেন কীভাবে আদালত পরিচালিত হবে। এমন সিদ্ধান্ত নিলে আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। আমি বিশ্বাস করি যে, আমরা যে কথাগুলো প্রধান বিচারপতিকে বলেছি, নিশ্চয় তিনি সেগুলো বিবেচনা করবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার কাজল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তো সবসময় শারীরিক উপস্থিতিতে আদালত পরিচালনার পক্ষে। কিন্তু যেহেতু করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে। অনেক বিচারক আক্রান্ত হচ্ছেন। আইনজীবীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আদালত যদি এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে তারা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আদালত পরিচালনা করবেন, সে ক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে শারীরিক উপস্থিতিতে যেসব অধিক্ষেত্রে আদালত পরিচালনা হয়ে আসছে সেগুলো যেন অব্যাহত থাকে এবং আদালতের পূর্ণাঙ্গ যে কর্মঘণ্টা সেটুকু যেন থাকে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত ৩০ জন আইনজীবীর করোনা আক্রান্তের খবর আছে। গত এক বছরে আমাদের ১৩৪ জন আইনজীবী মারা গেছেন। তার মধ্যে সবাই যে করোনায় মারা গেছেন তেমনটি নয়। এর মধ্যে অনেকেই করোনায় মারা গেছেন। তবে অনেকেই করোনায় মারা গেলেও তারা আমাদের জানাননি। এজন্য করোনায় কতজন আইনজীবী মারা গেছেন তা সুনির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল।

Advertisement

এফএইচ/এমআরআর/এএসএম