বালেগ, স্বাধীন, জ্ঞানী নারী-পুরুষের উপর নামাজ পড়া ফরজ। এ নামাজ আদায়ে একাগ্রতা, একনিষ্ঠতার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। আবার একাকি নামাজ পড়ার চেয়ে একই নামাজ জামাতে পড়ায় সওয়াব বেশি। কিন্তু জামাতে নামাজ পড়ার সওয়াব বেশি হওয়ার কারণ কি? এ সম্পর্কে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কী বলেছেন?
Advertisement
জামাতে নামাজ পড়ার সওয়াব বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে একসঙ্গে রুকু-সেজদা করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে যাওয়া। আল্লাহর কাছে মসজিদে যাওয়ার বিষয়টি খুবই পছন্দনীয়। আল্লাহ নিজেই বলেছেন-
وَ ارۡکَعُوۡا مَعَ الرّٰکِعِیۡنَ
আর রুকুকারীদের সঙ্গে (জামাতে) একসঙ্গে রুকু করো।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৩)
Advertisement
তাই যারা জামাতে নামাজ পড়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে মসজিদের দিকি যায়; তাদের প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে দান করেন নামাজ-রোজার সওয়াব, বাড়ানে মর্যাদা আর ক্ষমা করবেন গুনাহ। এ কারণেই হাদিসে পাকে জামাতে নামাজের সওয়াব বেশির কথা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে ঘোষণা করেছেন-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, পুরুষদের পক্ষে জামাতে নামাজ পড়ার সওয়াব তার ঘর ও বাজারে নামাজ পড়ার চেয়ে পঁচিশ গুণ বেশি। এই কারণে যে-
কোনো ব্যক্তি যখন খুব ভালভাবে অজু করে নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে গমন করে এবং নামাজ ছাড়া তার মনে আর কোনো উদ্দেশ্য থাকে না; তখন মসজিদে প্রবেশ না করা পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং একটি করে গুনাহও মাফ হয়ে যায়। মসজিদে প্রবেশ করে যতক্ষণ পর্যন্ত সে নামাজের অপেক্ষায় থাকে, ততক্ষণ সে নামাজের অনুরূপ সওয়াবই পেতে থাকে।
আর যে ব্যক্তি (জামাতে) নামাজ পড়ার পর কাউকে কষ্ট না দিয়ে অজুসহ মসজিদে অবস্থান করে, ততক্ষণ ফেরেশতারা তার মার্জনার (ক্ষমার) জন্য এই বলে দোয়া করতে থাকে-
Advertisement
‘হে আল্লাহ! একে তুমি ক্ষমা করে দাও; হে আল্লাহ! এর তাওবা কবুল কর; হে আল্লাহ! এর প্রতি তুমি দয়া প্রদর্শন কর।’ (বুখারি ও মুসলিম)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, মসজিদ কাছে কিংবা দূরে হোক আজানের সঙ্গে সঙ্গে নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে ধীরস্থিরভাবে মসজিদের দিকে যাওয়া। জামাতে নামাজ পড়ার জন্য অপেক্ষা করা। সম্ভব হলে নামাজের পর অজুর সঙ্গে বসে ইবাদত-বন্দেগি করা। আর এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ বান্দাকে দান করবেন ২৫গুন বেশি সাওয়াব। বাড়িয়ে দেবেন মর্যাদা। ক্ষমা করে দেবেন গুনাহ। আর ফেরেশতারাও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জামাতে নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জামাতে নামাজ পড়ার মাধ্যমে মর্যাদা পাওয়া ও গুনাহ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস