বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে শীর্ষ ১০ ধনী ব্যক্তির সম্পদের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম বলছে, বিশ্বের এই শীর্ষ ১০ ধনীর সম্পদের পরিমাণ ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এতে ধনী ও দরিদ্র্যের ব্যবধান আরও বেড়েছে। সম্প্রতি এ ধরনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।
Advertisement
করোনা মহামারি মোকাবিলায় ধনীদের সম্পদের ওপর কর আরোপের অনুরোধও জানায় সংস্থাটি। সংস্থাটি বলছে, করোনা মহামারিকালে বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যে উঠে এসেছে, বিশ্বের ১৬৩ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৬ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে, যেখানে ধনীরা আরও ফুলেফেঁপে উঠেছেন দেশগুলোর সরকারের সহায়তা পেয়ে।
অক্সফামের প্রজেক্টের তথ্য বলছে, ২০৩০ সালে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন অর্থাৎ ৩৩০ কোটি মানুষ দৈনিক ৫ দশমিক ৫০ ডলারের কম আয় করবে।
দাতা সংস্থাটি বলছে, বিশ্বের ৯৯ শতাংশ মানুষের আয় ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কমে গিয়েছিল। এদিকে, ইলেক্ট্রিক কার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কসহ বিশ্বের আরও নয়জন বিলিয়নিয়ারের দৈনিক আয় বেড়েছে এক দশমিক ৩ বিলিয়ন অর্থাৎ ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।
Advertisement
ফোর্বস ম্যাগাজিনের এ বছরের ধনীর তালিকার হিসাবে দেখা গেছে, প্রথম ১০ ধনী ব্যক্তির প্রত্যেকের সম্পত্তির পরিমাণ ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি। তাদের মধ্যে টেসলার মালিক এলন মাস্কের সম্পত্তির পরিমাণই ২৯৪ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ২৯ হাজার ৪০ কোটি মার্কিন ডলার।
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হন ইলন মাস্ক। এ সময়ের মধ্যে বেজোসের মোট সম্পদ ৬৭ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গের সম্পদ দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ১১৮ বিলিয়ন ডলার, মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের সম্পদ ৩১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৭ বিলিয়ন ডলার।
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক বৈঠকের আগে অক্সফাম সাধারণত এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কিন্তু চলতি বছরও সেটি স্থগিত করা হয়েছে মহামারির কারণে। ফলে বিশ্বের শীর্ষ ধনী এবং ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা উপস্থিত হতে পারছেন না এবারও।
সংস্থাটি আরও বলছে, এই অর্থনৈতিক অসমতার কারণে বিভিন্ন ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না দরিদ্র মানুষরা। ক্ষুধা, লিঙ্গবৈষম্যগত সহিংসতাও বেড়েছে। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও পড়ছে।
Advertisement
অক্সফামের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বিলিয়নিয়ারদের যখন বিস্ফোরণ ঘটছে, তখন বহু মানুষও দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। ফলে অর্থনীতির ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। এটি একটি দুঃখজনক ব্যাপার যে, খাদ্য ও স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় উপাদানের অভাবে প্রতিনিয়ত বহু মানুষ মারা যাচ্ছে।
সূত্র: আল-জাজিরা, গার্ডিয়ান
এসএনআর/জেআইএম