করোনা মহামারি মোকাবিলায় এবার ফ্রান্স সরকারের সর্বশেষ পদক্ষেপের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট। টিকা-বিরোধীদের আন্দোলন সত্ত্বেও সরকারের ভ্যাকসিন পাস আইনের অনুমোদন দেওয়া হলো ফ্রান্সে।
Advertisement
ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে আইনপ্রণেতাদের মধ্যে ভ্যাকসিন পাস আইনের সমর্থনে ভোট পড়ে ২১৫টি। আইনটির বিরোধীতায় ভোট পড়ে ৫৮টি। স্থানীয় সময় রোববার (১৬ জানুয়ারি) এ ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, আগামী দিনে ভ্যাকসিন পাস আইন প্রয়োগের পথ আরও প্রশস্ত হলো দেশটিতে। নতুন আইন অনুযায়ী ফ্রান্সে সাধারণ জনগণকে রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, সিনেমা হল এবং দূরপাল্লার ট্রেনের মতো কোনো গণপরিবহনে গেলে অবশ্যই ভ্যাকসিন পাস প্রয়োজন হবে। যদিও এসব নিয়ম-কানুন সাধারণ মানুষের পক্ষে মানা কঠিন বলে মনে করছেন আইনটির বিপক্ষে ভোট দেওয়া আইনপ্রণেতারা। বর্তমানে টিকার ডোজ সম্পন্ন না করা লোকজনকে করোনা টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে হয়। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শনিবারের (১৫ জানুয়ারি) তথ্য অনুযায়ী, যদিও দেশটির ৭৮ শতাংশের মতো মানুষ করোনার টিকা নিয়েছেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এর আগে বলেছিলেন, করোনার টিকা না নিয়ে জীবনকে জটিল করে তুলছেন কেউ কেউ। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দেশটিতে যারা এখনো করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি, তাদের জোর করে ভ্যাকসিন দেবেন না। তবে তাদের জীবনকে কঠিন করে দেবেন। বিরোধী দল এবং বিক্ষোভকারীরা তার এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। তারা অভিযোগ করেন, সরকার জনগণের স্বাধীনতা খর্ব করছে এবং নাগরিকদের সাথে অসম আচরণ করছে।
Advertisement
আগামী এপ্রিলে প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভত নির্বাচনী কার্যক্রম শুরুর আগেই সবাইকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে চান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ, এমন ধারণা অমূলক নয়।
ভ্যাকসিন পাস আইনের বিরুদ্ধে শনিবারও প্যারিসসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি শহরে হাজার হাজার ভ্যাকসিন-বিরোধী বিক্ষোভকারী অংশ নেন। তবে ম্যাক্রোঁর টিকা নেওয়ার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দেওয়ার ঠিক পরেই তাদের সংখ্যা আগের সপ্তাহের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে।
ফ্রান্সে করোনার পঞ্চম ঢেউয়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে দ্রুত গতিতে। দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে সর্বোচ্চ তিন লাখের ঘরে। তবে ২০২০ সালে করোনার প্রথম ঢেউয়ে ইনটেনসিভ কেয়ারে যে পরিমাণ লোক ভর্তি হয়েছিলেন এবার তুলনামূলক তা কম দেশটিতে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
Advertisement
এসএনআর/জেআইএম