জলবসন্ত, গুটিবসন্ত, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, কুষ্ঠ ও ডায়রিয়ার মতো রোগকে জয় করেছে মানুষ। বিজ্ঞানের কল্যাণে এসব রোগের টিকাও আবিষ্কার হয়েছে। কিন্তু ডায়াবেটিস নির্মূলে কোনো ওষুধ এখনো আবিষ্কার হয়নি। রোগটি এমনই বিশ্বস্ত যে একবার ধরলে আর ছাড়ে না। তবে নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ ও নিয়ম মেনে চললে এ রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
Advertisement
রোগটি নিয়ে সচেতন নয়ে এদেশের মানুষ। হাজার হাজার মানুষ জানেই না তাদের ডায়াবেটিস রোগ আছে। একেবারে শেষ সময়ে রোগটি ধরা পড়ে বলে কিছুই করার থাকে না। বিষয়গুলো নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন ডা. ডিসি রায়।
শুভসকাল ব্যায়াম কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি মানুষকে ডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কে সচেতন করে চলেছেন। মাসের প্রথম সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ডায়াবেটিস রোগীদের বিনামূল্যে ইনসুলিনসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বিতরণ করেন তিনি। করেন পরীক্ষাও। রোগটি নিয়ে বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিমের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে তোলার চেষ্টা করছেন তিনি।
ডায়াবেটিস সম্পর্কে মানুষের মধ্যে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি, এ রোগ থেকে মুক্তির উপায়, আগে ও পরে করণীয়, ওষুধ খাবার নিয়ম, ইনসুলিন গ্রহণ, ব্যায়াম, নিয়ম মেনে খাবার ও বিভিন্ন রকমের কসরত শেখানো নিয়ে কাজ করছেন ডা. ডিসি রায়।
Advertisement
সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নিজ জন্মস্থানে গড়ে তুলেছেন বীরগঞ্জ ডায়াবেটিস অ্যান্ড ফুট কেয়ার সেন্টার। এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের ডায়াবেটিস সম্পর্কে শিক্ষা, বিনামূল্যে ব্যবস্থাপত্রসহ নামমাত্র মূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ওই কেন্দ্রে সপ্তাহে দুদিন এলাকার রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। জেলার ১০২ ইউনিয়নে ডায়াবেটিস চিকিৎসা ও সচেতনতা তৈরিতে ফ্রি ক্যাম্প করা হয়।
তার পুরো নাম দুলাল চন্দ্র রায়। তবে তিনি পরিচিতি পেয়েছেন ডা. ডিসি রায় হিসেবে। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পাল্টাপুর ইউনিয়নের সাবেক শিক্ষক বাবু দীনেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে তিনি। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ২০০৩ সালে এমবিবিএস ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর পেশাগত অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ঢাকার বারডেম হাসপাতাল থেকে ডায়াবেটিস রোগের ওপর প্রশিক্ষণ শেষে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৯ সালে ভারতের মাদ্রাজের এম ভি হসপিটাল ফর ডায়াবেটিস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার থেকে ডায়াবেটিস এবং ডায়াবেটিস রোগীদের পা সংক্রান্ত জটিলতার ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই বৎসর মেয়াদী পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা অ্যান্ড ডায়াবেটিস ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০১৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ইন ডায়াবেটিস ডিগ্রী প্রাপ্ত হন।
এমদাদুল হক মিলন/আরএইচ/জেআইএম
Advertisement