মুম্বাই যেন ব্যাটসম্যান প্রসবীনি। ১৯৮৮ সালেই তো মুম্বাই ক্রিকেট বিশ্ব ক্রিকেটে তারকা উদ্ভাবনের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছিল। শর্দাসরম বিদ্যামন্দির স্কুলের হয়ে দুই স্কুলবালক শচীন টেন্ডুলকার আর বিনোদ কাম্বলির ৬৬৪ রানের জুটির কথা কার না জানা! সেই শচীন এখন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। কেউ কেউ তো স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের পর তাকেই ঠাঁই দিয়ে রেখেছেন।মুম্বাই স্কুল ক্রিকেট শুধু শচীন আর বিনোদ কাম্বলিকে জন্ম দিয়েই থেমে থাকেনি। একের পর এক বিস্ময় উপহার দিয়েই যাচ্ছে। এই তো কিছুদিন আগে, ২০১০ সালেই আরমান জাফর নামে একজনকে উপহার দিয়েছে মুম্বাই স্কুল ক্রিকেট। ভারতীয় জাতীয় দলের ব্যাটসম্যান ওয়াসিম জাফরের ভাতিজা আরমান জাফর হ্যারিস শিল্ডে একাই ৪৭৩ রানের ইনিংস খেলে বিস্ময় সৃষ্টি করেছিল।আরমানের ইনিংসকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল পৃথ্বি সাও নামের আরেক স্কুল বালক। মুম্বাইয়ের সেই হ্যারিস শিল্ডেই ১৪ বছর বয়সী পৃথ্বি সাও খেলেছিল ৫৪৬ রানের ইনিংস। ভারতীয় ক্রিকেটে যা ছিল একটি রেকর্ড। ২০১৩ সালের ঘটনা এটি। অনেকেই মনে করেছিল, পৃথ্বি সাও যা করে দিয়েছে, সেটাকে আধুনিক ক্রিকেটে ভাঙা খুবই অসম্ভব।কিন্তু, ২০১৬- নতুন বছরের নতুন দিনে এসে মুম্বাইর আরেক বালক প্রণব ধানওয়াড়ে যা করে দেখালো তাতো চোখ কপালে তুলে দেয়ার মতো। যেই শুনছে তার কীর্তির কথা, সেই বলছে- এটাও কি সম্ভব। মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তঃস্কুল টুর্নামেন্ট এইচটি ভান্ডারি কাপে সোমবার আরিয়া গুরুকুল স্কুলের বিপক্ষে কেসি গান্ধী স্কুলের হয়ে প্রথম দিনেই ১৫ বছরের এই বালক অপরাজিত ছিল ৬৫২ রানে। বল খেলেছিল মাত্র ১৯৯টি। দুই দিনের ম্যাচের দ্বিতীয় দিন এসে ধানওয়াড়ে তার ইনিংসটা লম্বা করলো ১০০৯ রান পর্যন্ত। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম কোনো ব্যাটসম্যান হিসেবে এক ইনিংসে এক হাজার রান করার কৃতিত্ব দেখালো ধানওয়াড়ে। বল খেলেছিল ৩২৭টি।এক অটো চালকের ছেলে ধানওয়াড়ের কীর্তি দেখে অভিভূত স্বয়ং শচীন টেন্ডুলকারও। টুইটারের মাধ্যমে তিনি অভিনন্দন জানালেন ধানওয়াড়েকে। অভিনন্দন বার্তা ভারতীয় অফ-স্পিনার হরভজন সিংয়েরও।মঙ্গলবার মুম্বাইয়ের আন্তঃস্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে এক ইনিংসে ১০০৯ রান করে বিশ্বরেকর্ড করে অটোচালকের ছেলে প্রণব। এ খবর শোনার পর টুইটারে অভিনন্দন জানিয়ে লিটল মাস্টার লেখেন, ‘এক ইনিংসে প্রথম ১০০০ রান করার জন্য অভিনন্দন। সাবাশ! আরও পরিশ্রম করো। তোমাকে নতুন চূড়া তৈরি করতে হবে!’ ব্যাশ, ভারতীয় ডনের এমন অভিন্দন পেলে তো যেকোনো ক্রিকেটারেরই পথ চলার পাথেয় তৈরি হয়ে যায়। ধানওয়াড়ে কি পারবে, সেটা ধরে রাখতে!ধানওয়াড়েকে নয়া কীর্তির জন্য অভিনন্দন ভাজ্জিরও। টুইটারে অভিনন্দন জানিয়ে হরভজন লেখেছেন, ‘সাবাশ! কোনো ধরনের টুর্নামেন্ট সেটা ব্যাপার নয়; কিন্তু নম্বরটা সত্যিই অবিশ্বাস্য!’ ৩২৩ বলের ইনিংসে ১২৯টি বাউন্ডারি ও ৫৯টি ওভার বাউন্ডারি মারে প্রণবভ যেকোনো ধরনের ক্রিকেট ম্যাচেই যা বিশ্বরেকর্ড।আইএইচএস/বিএ
Advertisement