ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ফুটবল লিগের তোড়জোড় বহুদিন আগেই শুরু করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কিছুদিন আগেই বাফুফে প্রেসিডেন্ট কাজী সালাউদ্দিন জানিয়েছিলেন, শতকোটি টাকার ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ফুটবল লিগ মাঠে গড়াতে যাচ্ছে। আগামী নভেম্বরেই সেটা আলোর মুখ দেখবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। অবশেষে সেটাই সত্যি হতে যাচ্ছে। স্বপ্নের বাংলাদেশ সুপার লিগ (বিএসএল) আগামী নভেম্বরে মাঠে গড়ানোর ঘোষণাটা আনুষ্ঠানিকভাবে দিয়ে দিল বাফুফে।বাংলাদেশ সুপার লিগের পৃষ্ঠপোষক সাইফ পাওয়ারটেকের মধ্যে আজ (মঙ্গলবার) ১৫ বছরের একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাফুফে। এ সময়ে ৩৫ কোটি টাকা বাফুফেকে দেবে সাইফ পাওয়ারটেক। এ লিগ স্থান পাচ্ছে বাফুফের বর্ষপঞ্জিকাতেও। লিগে অংশ নেবে ৬ থেকে ৮ ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্লাব। তবে কোন কোন ক্লাব অংশ নেবে তা এখনও ঠিক হয়নি। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন, সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমীনসহ আরও অনেকে।রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এবং যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্লাব কিনতে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ও জানালেন, যদি প্রস্তাব দেয়া হয় তিনি ময়মনসিংহ বিভাগের ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে লিগে অংশ নিতে চান।বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘সাইফ পাওয়ার গোটা বিষয় অর্গানাইজ করবে। বাফুফে থাকবে এর কো-পার্টনার হিসেবে। আমরা গাইডলাইন দেবো। মার্কেটিং থেকে আরম্ভ করে সব কিছু তারা করবে। সে জন্য তারা আমাদের একটা লাইসেন্স ফি দেবে। একটা-দুইটা বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে হয়তো তারা এটাকে উপস্থাপন করবে।’সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘বাফুফের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারের এ চুক্তি বাংলাদেশের ফুটবলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। যদি আমাকে প্রস্তাব দেয়া হয়, তাহলে আমি খুলনা ডিভিশনের দল কিনবো।’তরফদার মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ খেলবে এটা আমাদের সবার স্বপ্ন। কিন্তু বর্তমানে ফুটবলে যে ধারা চলছে এর থেকে বের না হয়ে আসতে পারলে সে স্বপ্ন সত্য হবে না। ভারতে আইএসএল নামে এই ঘরানার একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়। সাফে আমরা যে আফগানদের সঙ্গে পেরে উঠিনি। সেই আফগানদেরই হারিয়ে দিয়েছে ভারত। অথচ দুই বছর আগেও এই ভারতের ফুটবলে ছিলো দৈন্যদশা। এই সাফল্যের পেছনে কিন্তু বড় অবদান আইএসএলের। আমাদের দেশের ফুটবলেরও এই দিন থাকবে না।’ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনে বড় সমস্যা- স্টেডিয়াম স্বল্পতা। ভালোমানের ফুটবল স্টেডিয়াম মাত্র দুটি। জেলা পর্যায়ের স্টেডিয়ামগুলোর বেশিরভাগেই নেই ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থা। তাছাড়া বিভিন্ন জেলায় স্টেডিয়াম নিয়ে যে দাবি এসেছে সেগুলো নিয়েই তিনি প্রয়োজনীয় আলোচনা করবেন। ইতোমধ্যে বরিশাল ও রাজশাহী জেলা স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারও আশ্বস্ত করলেন ভেন্যুর বিষয়টি তিনি দেখবেন। প্রধান অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানান, ফুটবলের জন্য যেন বাজেট বরাদ্দ হয় তার জোর চেষ্টা চালাবেন তিনি।এর আগে বাংলাদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ করা যেতে পারে এই চিন্তাধারা নিয়ে বাফুফের সঙ্গে সবার আগে আলোচনা করেছিল ভারতের সেলিব্রেটি ম্যানেজম্যান্ট নামে একটি সংস্থা। সঙ্গে নাম শোনা গিয়েছিল সকার ইউকে নামের একটি প্রতিষ্ঠানেরও।গত বছর নভেম্বরে তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনাও এগিয়েছিলো বাফুফে। বাফুফে জানিয়েছে সকার ইউকে যদি চায় তবে সাইফ পাওয়ারের সঙ্গে পার্টনারশিপে যাবার রাস্তা তাদের খোলা আছে।আইএইচএস/বিএ
Advertisement