দেশের সরকারি হাসপাতালের শয্যা জনসংখ্যানুপাতে সুষম বণ্টন হচ্ছে না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে সকলের জন্য উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ণের মাধ্যমে বিভাগওয়ারি জনসংখ্যা হিসেবে মেডিকেল কলেজ, সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি (জেলা, উপজেলা ও বিশেষায়িত) পর্যায়ের হাসপাতাল স্থাপন অত্যাবশ্যক। কিন্তু বাস্তবতা হলো জনসংখ্যানুপাতে এ সব হাসপাতাল স্থাপিত হচ্ছে না। বর্তমানে দেশে ১২৮টি সরকারি হাসপাতালে মোট শয্যা সংখ্যা ২৯হাজার ২শ’৭৮টি। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে প্রায় অর্ধশত হাসপাতালে ১৩ হাজারেরও বেশি শয্যা রয়েছে। ঢাকা বিভাগে প্রতি ১৫ হাজার ৮শ’ ৮৮ জন মানুষের জন্য ১টি শয্যা বরাদ্দ রয়েছে। অপরদিকে খুলনা বিভাগে প্রতি ৪২ হাজার ৪শ’২১ জনের জন্য একটি শয্যা বরাদ্দ রয়েছে। জাতীয় গড় হিসেবে মেডিকেল কলেজে প্রতি ১২ হাজার ৩৯ জন ও টারশিয়ারি ও সেকেন্ডারি পর্যায়ের হাসপাতালে প্রতি ৯ হাজার ৫শ’৬৫ জনের জন্য ১টি করে শয্যা রয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রকাশিত হেলথ বুলেটিন ২০১৫ তে এ তথ্য উঠে এসেছে। বর্তমানে দেশে ১২৮টি হাসপাতালের মধ্যে ১৩টি বক্ষব্যাধি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৮১৬টি। একইভাবে ১টি ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালে ২০০টি, ৬৪টি জেলা সদর হাসপাতালে ১০ হাজার ২শ’৫০টি, ২টি অলটারনেটিভ মেডিসিন হাসপাতালে ২০০টি, ৫টি সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ১৮০টি, ৩টি কুষ্ঠ হাসপাতালে ১শ’৩০টি, ১৪টি মেডিকেল কলেজে ১২ হাজার ৯শ’ ৬৩টি, ৫টি ট্রমা সেন্টারে ১শ’টি, ৩টি ৫০ শয্যার হাসপাতালে ১শ’৫০টি, ১১টি বিশেষায়িত সেবা স্নাতকোত্তর ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ৩ হাজার ১শ’৮৪টি, ৪টি বিশেষায়িত হাসপাতালে ৯শ’৫০টি ও অন্যান্য ৩টি হাসপাতালে ১৫৫টি শয্যা রয়েছে। ১৪টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট ১২হাজার ৯শ’৬৩ শয্যার মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৫ হাজার ৫শ’৫০টি, চট্টগ্রামে ১ হাজার ৮শ’১৩টি, রাজশাহীতে ১ হাজার ৭শ’টি, রংপুরে ১ হাজার ৫শ’টি, বরিশালে ১ হাজার, সিলেট বিভাগে ৯শ’টি ও খুলনায় ৫শ’ শয্যা রয়েছে। অপরদিকে সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি পর্যায়ের হাসপাতালে মোট ১৬ হাজার ৩শ’ ১৫টি শয্যার মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৭ হাজার ৭শ’৫৪টি, চট্টগ্রামে ২হাজার ৩শ’ ৫০টি, রাজশাহীতে ১হাজার ৬শ’ ৮০টি, খুলনায় ২ হাজার ১৫টি, রংপুরে ৯শ’৯০টি , বরিশালে ৬শ’৯০টি ও সিলেট বিভাগে ৮শ’৩৬টি শয্যা রয়েছে।স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রকাশিত হেলথ বুলেটিনে আরো দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতি ৯হাজার ২শ’৬০ জনের জন্য ১টি ও সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি হাসপাতালে ৬হাজার ৬শ’ ২৮জনের জন্য ১টি করে শয্যা রয়েছে। চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজে প্রতি ১৬হাজার ৯শ’৮৫ জনের জন্য ১টি ও সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি হাসপাতালে প্রতি ১৩ হাজার ১শ’৪ জনের জন্য ১টি শয্যা, খুলনা মেডিকেল কলেজে প্রতি ৩৩ হাজার ৯শ’৮৭ জনের জন্য ১টি ও সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি হাসপাতালে প্রতি ৮ হাজার ৪শ’৩৪ জনের জন্য ১টি শয্যা, রাজশাহী মেডিকেল কলেজে প্রতি ১১ হাজার ৭শ’৮৪জনের জন্য ১টি ও সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি হাসপাতালে প্রতি ১১হাজার ৯শ’২৪ জনের জন্য ১টি শয্যা, রংপুর মেডিকেল কলেজে প্রতি ১১হাজার ৪শ’১জনের জন্য ১টি ও সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি হাসপাতালে প্রতি ১৭হাজার ২শ’৭৪জনের জন্য ১টি শয্যা, সিলেট মেডিকেল কলেজে প্রতি ১১হাজার ৯শ’২১ জনের জন্য ১টি ও সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি হাসপাতালে প্রতি ১২হাজার ৮শ’৩৪ জনের জন্য ১টি শয্যা, বরিশাল মেডিকেল কলেজে প্রতি ৯ হাজার ১৫ জনের জন্য ১টি ও সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি হাসপাতালে প্রতি ১৩ হাজার ৬৬জনের জন্য ১টি শয্যা রয়েছে।এমইউ/এসএইচএস/আরআইপি
Advertisement