নভেম্বরে শুরু করা ৫০ লাখ স্মার্ট কার্ড ছাপানো শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি মাসের মধ্যেই বিতরণ করা হবে এসব কার্ড। এর আগে তিনবার ঘোষণা দিয়েও স্মার্ট কার্ড বিতরণ করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। তাই এবার পুরো প্রস্তুতি নিয়েই তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে ইসি। দেশের সব নাগরিকের হাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দিতে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ব্যাপক প্রস্তুতি চালাচ্ছে। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।জানা গেছে, ২০১৪ সালে যারা ভোটার হয়েছেন তাদের এ স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। কারণ তাদের কোনো পরিচয়পত্র দেয়া হয়নি। সে অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ভোটারদের কার্ড ছাপানো হয়েছে। যা খুব শিগগিরই বিতরণ করা হবে। তবে দিন তারিখ জানাতে রাজি নয় নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা।ইসি সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৯ কোটি ৬২ লাখ। সে অনুযায়ী সবার স্মার্ট কার্ড ছাপাতে প্রায় দু’বছর সময় লাগবে। এই স্মার্ট কার্ড দিয়ে নাগরিকরা অন্তত ২৫ ধরনের ই-সেবা নিতে পারবে বলে জানা গেছে।ইসি কর্মকর্তারা জানান, জালিয়াতি রোধে জাতীয় পরিচয়পত্রকে আধুনিকভাবে তৈরি, যন্ত্রে পাঠযোগ্য জাতীয় পরিচয়পত্রকেই স্মার্টকার্ড বলে। একে ভোটার আইডি বলেও অভিহিত করা হয়। বর্তমানে যে পরিচয়পত্র বা কার্ড চালু রয়েছে তা সাধারণ পাতলা কাগজে প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করা। যার প্রথম পৃষ্ঠায় নিজের নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখ ও আইডি নম্বর এবং অপর পৃষ্ঠায় ঠিকানা দেয়া থাকে।এ কারণে কার্ডটি সহজেই নকল করা সম্ভব। অসাধু ব্যক্তিরা এটি সহজেই নকল করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে। ফলে নাগরিক ভোগান্তি ও হয়রানি বাড়ছে। এটি রোধ করতেই স্মার্টকার্ড তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসি। এটি যন্ত্রে পাঠযোগ্য। অসাধু ব্যক্তিরা সহজেই নকল করতে পারবে না। ভোটারের বা পরিচয়পত্রধারীর আইডি নম্বর ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য এই আইডিতে সংরক্ষিত থাকবে। শুধুমাত্র যন্ত্রের সাহায্যে এসব তথ্য পাঠ করা যাবে। টেকসই ও সুন্দর অবয়বে এ কার্ড বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় তা সাধারণভাবে স্মার্ট কার্ড হিসেবেই বিবেচিত হবে।ইসি সূত্র জানিয়েছে, স্মার্ট কার্ড হবে মেশিন রিডেবল, যা কার্ড জালিয়াতির হাত থেকে বাড়তি নিরাপত্তা প্রদান করবে। পরপর দুবার হারালেই কার্ড সংগ্রহে ভোটারকে জরিমানা দিতে হবে দুই থেকে চার হাজার টাকা।বর্তমানে ভোটারদের কাছে বিদ্যমান লেমিনেটেড ন্যাশনাল আইডি কার্ড ফেরত নিয়ে প্রথমবারের মত বিনামূল্যেই স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে। এরপর পুনরায় মেশিনে পাঠযোগ্য এই কার্ড পেতে চাইলে একটি নির্দিষ্ট ফি দিতে হবে। জানা গেছে, বিভিন্ন পাবলিক সার্ভিস নিতে এই আইডি কার্ড প্রদর্শন আবশ্যক করার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের।এরই মধ্যে ভোটারদের উন্নত মানের স্মার্ট কার্ড দেয়ার আগে বিদ্যমান জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে । গত রোববার ইসি সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন।সুলতানুজ্জামান জানান, অনলাইনে আবেদনের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। সোমবার কমিশন সভায় অনুমোদনের জন্য এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। “কমিশনের সম্মতি পেলে এক সপ্তাহের মধ্যে এনআইডি তথ্য সংশোধনের জন্য সবাইকে সুযোগ দেয়া হবে। এক্ষেত্রে অনলাইন ও লিখিত আবেদন করতে পারবে ভোটাররা।”বর্তমানে যে জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাল করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। উন্নতমানের এই কার্ড ব্যবহার করে ২০ ধরনের নাগরিক সেবা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ভবিষতে ই-পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশন সেবাসহ বহুবিধ কাজে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে।আরএম/এসকেডি/আরআইপি
Advertisement