সিঙ্গাপুরে চাকরি হারাতে পারেন এখনো করোনারোধী টিকা না নেওয়া প্রায় ৪৮ হাজার কর্মী। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে অফিসে প্রবেশে নতুন বিধিনিষেধ কার্যকর হওয়ায় এ ঝুঁকিতে পড়েছেন তারা। খবর ব্লুমবার্গের।
Advertisement
এতদিন টিকা না নেওয়া থাকলেও করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ সনদধারী কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছিল সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নতুন সরকারি আদেশে সেই সুবিধা বাতিল করা হয়েছে।
এখন থেকে নিয়োগদাতারা টিকা না নেওয়া কর্মীদের বাড়ি থেকে করার মতো উপযুক্ত কাজে পুনর্নিয়োগ করতে পারবেন, তাদের বিনাবেতনে ছুটিতে রাখতে পারবেন অথবা শেষ পন্থা হিসেবে কর্মীরা কর্মক্ষেত্রের বাইরে চুক্তিবদ্ধ কাজ সম্পাদন করতে না পারলে তাদের বরখাস্তও করা যাবে।
সিঙ্গাপুরে টিকাদানের হার গোটা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ। টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই কঠোর নগররাষ্ট্রটি। এ ধরনের ব্যক্তিদের রেস্টুরেন্ট-শপিংমলে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এর মধ্যেই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ নীতি বাদ দিয়ে ধীরে ধীরে কর্মক্ষেত্রেগুলো খুলে দেওয়ার পথে হাঁটতে শুরু করেছে সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
গত ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে অন্তত ৪৮ হাজার কর্মী টিকা না নেওয়া রয়েছেন, যা দেশটির মোট শ্রমশক্তির মাত্র দুই শতাংশ। এরপরও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে দেশটির সরকার।
সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় সচিব রাহায়ু মাহজাম উদ্বেগ জানিয়ে বলেছেন, যদি এই ৪৮ হাজারের সবাই করোনায় আক্রান্ত হন, তবে তা সত্যিই আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় গুরুতর প্রভাব ফেলবে।
গত ১০ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, শতভাগ টিকা নেওয়া শ্রমশক্তি দিয়ে কার্যক্রম আরও নিরাপদে চালানো যাবে। এসময় তিনি মহামারিকালের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন, কীভাবে দেশটির দুই-তৃতীয়াংশ আইসিইউ টিকা না নেওয়া মানুষদের দখলে চলে গেছে।
সিঙ্গাপুরে মোট জনগোষ্ঠীর ৮৭ শতাংশ পূর্ণডোজ টিকা পেয়েছেন এবং ৪৯ শতাংশ বুস্টার ডোজও নিয়েছেন। তবে টিকা না নেওয়া কর্মীরা দীর্ঘদিন কর্মক্ষেত্র থেকে দূরে থাকলে তাদের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে টিকার প্রতি অনীহার কারণ জানতে তাদের সঙ্গে নিয়োগদাতাদের কথা বলার পরামর্শ দিয়েছে সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশন এবং সিঙ্গাপুর ম্যানুফ্যাকচারিং ফেডারেশন।
Advertisement
২৭ ডিসেম্বরের নির্দেশনার আরও কিছু বিধিনিষেধকর্মক্ষেত্রে উপস্থিত হয়ে চুক্তিবদ্ধ কাজ করতে না পারার কারণে যদি কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়, তবে তা অন্যয় বলে বিচেচিত হবে না।
মেডিক্যাল কারণে যারা টিকা নিতে পারছেন না, তাদের অফিসে যাওয়ার অনুমতি বহাল থাকবে। তবুও, এ ধরনের কর্মীদের বাড়ি থেকেই কাজ করানোর বিষয়টি নিয়োগদাতাদের বিবেচনা করা উচিত। মেডিক্যালি যোগ্য বিবেচিত হলেও টিকা না নেওয়া গর্ভবতী কর্মীদের চাকরিচ্যুত করা উচিত নয়। বরং, তাদের চাহিদা ও উদ্বেগের বিষয়গুলো বিশেষভাবে বিবেচনার জন্য জোরালোভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
কেএএ/এমএস