মাস্ক ছাড়া কাউকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঢুকতে দিচ্ছেন না রেলওয়ে কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা রক্ষীরা। ভেতরে কেউ মাস্ক ছাড়া আছে কি না তাও তদারকি করা হচ্ছে।
Advertisement
এদিকে বিধিনিষেধের খবরে অনেকেই আতঙ্কিত। লকডাউন হতে পারে- এই ভয়ে কেউ কেউ পরিবার পরিজনকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন গ্রামে। ফলে, ঢাকা ছাড়ার মানুষের প্রচণ্ড চাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে কমলাপুর স্টেশনে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
কমলাপুর স্টেশনে দেখা যায়, আন্তঃনগর ট্রেনে সিট ছাড়া টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। অর্থাৎ কোন স্ট্যান্ড (দাঁড়ানো) টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। কমলাপুর স্টেশনে প্রবেশের প্রধান ফটকে টিকিট দেখানোর পর প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন কর্মকর্তারা। আবার যাত্রা শেষে বের হওয়ার পথেও চেক করা হচ্ছে তিনি টিকিট কেটে ভ্রমণ করলেন কিনা। করোনায় ট্রেনে সিট ছাড়া ভ্রমণের নিয়ম না থাকায় আন্তঃনগর কিংবা কমিউটার- কোনো ট্রেনেই সিট ছাড়া উঠছেন না যাত্রীরা।
Advertisement
করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় সশরীরে ক্লাস স্থগিত করেছে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। যাত্রীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছাত্র-ছাত্রী। তবে ঢাকা ছাড়ার যাত্রায় ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। মানুষের এতো চাপের কারণে ঠিকমতো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করাতে বেগ পেতে হচ্ছে রেল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জাগো জিউজকে বলেন, রেলে বরাবরই কর্মী সংকট ছিল। এখনো আছে। অল্প কয়েকজন কর্মী দিয়ে এতো বিশাল যাত্রীর চাপ সামলানো সম্ভব নয়। তারপরও চেষ্টা করছি যতটা পারা যায় স্বাস্থ্যবিধি মানাতে। আমরা সচেতন করতে বেশি চেষ্টা করছি। সবাইকে অনুরোধ করছি মাস্ক পরতে এবং নিরাপদ দূরত্ব রক্ষা করতে। ঘোষণাকারীও প্রতিবার ঘোষণার সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ করছেন।
লকডাউন ঘোষণা হয়ে যাবে সে ভয়ে অনেকেই নিজ পরিবারকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন গ্রামের বাড়িতে। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শফিউল ইসলাম তার পরিবারকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। মেয়ে এবং ছেলে দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী। দুজনের ক্যাম্পাসেই সশরীরে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অনলাইন ক্লাসের সুযোগে গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছেন। ঢাকাতে শুধু শফিউল থাকবেন। এর আগে লকডাউনে বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল তাকে। সেই ভয় জেঁকে বসেছে তার মধ্যে। এবারও যদি লকডাউন দেওয়া হয় তাহলে আবারও একই সমস্যায় পড়তে হতে পারে। ঢাকাতে এতো টাকা বাসা ভাড়া দিয়ে টিকে থাকা কষ্টকর বলে জানান তিনি। তাই আগেভাগেই গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছেন পরিজনকে। লকডাউন হলে তিনিও যাবেন বলে জানান।
স্টেশন এলাকার গুটি কয়েক লোক মাস্কবিহীন থাকলেও বেশিরভাগ ব্যক্তিই মাস্ক পরেছেন। অপরদিকে এ সুযোগটি লুফে নিয়েছেন মাস্ক বিক্রেতা বা হকাররা। তারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন মাস্কের। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন গেটে মাস্ক বিক্রেতারা তিনটা মাস্ক ১০ টাকায় বিক্রি করছেন। যা গতকালও পাঁচটি মাস্ক ১০ টাকায় বিক্রি করেছেন তারা।
Advertisement
ইএআর/কেএসআর/জেআইএম