দেশজুড়ে

রাজশাহীতে মৃত্যু কম, সংক্রমণ বেশি

গত এক মাস যাবৎ অধিকাংশ দিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিট থেকেছে মৃত্যুহীন। মাস দু’য়েক সংক্রমণ হারও বেশ নিম্নমুখী ছিল। কিন্তু বর্তমানে মৃত্যুর সংখ্যা কম থাকলেও সংক্রমণ বেড়েছে বহুগুণে।

Advertisement

বুধবার (১২ জানুয়ারি) রামেক হাসপাতালের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ জন নতুনভাবে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। যা গত এক সপ্তাহ আগেও ছিল মাত্র দু’একজন অথবা বড়জোড় তিন থেকে চারজন।

গত কয়েকমাস যাবৎ করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ কম থাকায় বন্ধ রয়েছে উপজেলা ও শহরের বিভিন্ন স্থানে র্যাডিপ এন্টিজেন টেস্ট। তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আরটিপিসিআর ল্যাব প্রায় ২০ দিনের মতো বন্ধ থাকলেও টেস্ট চলমান ছিল মেডিকেল কলেজের ল্যাবটিতে। সেক্ষেত্রে রামেকের প্রতিদিনের করোনা রিপোর্টে মৃত্যু ও সংক্রমণ হার বৃদ্ধির বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

রামেকের গত এক সপ্তাহের করোনার প্রতিবেদন পর্যালোচনা দেখা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি করোনায় মৃত্যুহীন দিন ছিল এবং রামেক ল্যাবে ১২৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৪ জনের পজিটিভ আসে। কিন্তু তার পরদিন থেকে অর্থাৎ গত ৫ জানুয়ারি থেকে তা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

Advertisement

৫ জানুয়ারি রামেকে করোনায় মারা যায় ৪ জন এবং ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হন ৭ জন, ৬ জানুয়ারি মৃত্যু হয় একজনের ও দুই ল্যাবে ১৪৫ জনের পরীক্ষায় ১১ জন শনাক্ত হন, ৭ জানুয়ারি ছিল মৃত্যুহীন তবে সেদিন দুই ল্যাবে ১৭৫ জনের পরীক্ষায় ২১ জন শনাক্ত হন, ৮ জানুয়ারি একজনের মৃত্যু ও ৯৪ জনের পরীক্ষায় ৩ জন শনাক্ত হন, ৯ জানুয়ারিতে একজনের মৃত্যু ও ২২৪ জনের পরীক্ষায় ১৪ জন শনাক্ত হন, ১০ জানুয়ারিতেও একজনের মৃত্যু ও ১৮১ জনের পরীক্ষায় ১৩ জন শনাক্ত হয়েছেন। পরদিন ১১ জানুয়ারিতে আবারো একজনের মৃত্যু ও দুই ল্যাবে ১৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৩ জন শনাক্ত হন। সর্বশেষ ১২ জানুয়ারি দুজনের মৃত্যু ও ২১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৬ জন শনাক্ত হয়েছেন।

রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি ও রামেকের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে রামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলছেন, এটা সত্যি যে মৃত্যুর হার কম হলেও সংক্রমণের হার বেশি। তৃতীয় ওয়েভের ক্ষেত্রেও তেমনটিই হবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞগণ। সেক্ষেত্রে আমরাও একটা পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েছি যাতে জনগণকে দুর্যোগের সময় সর্বোত্তম চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে পারি। তবে সংক্রমণ ঠেকাতে এখন থেকেই সকলকে সচেতন হওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন রামেক পরিচালক।

এদিকে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদারের বদলে এসেছেন নতুন সিভিল সার্জন। কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।

তবে জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, তৃতীয় ওয়েভে মানুষ সংক্রমিত হবে বেশি, মৃত্যু হবে কম। সেক্ষেত্রে জনসচেতার বিকল্প নেই। ইতোমধ্যে সরকার সচেতনতার তাগিদে ১৩ জানুয়ারি থেকে দেশের জনগণকে একটি বিধি নিষেধ আরোপ করেছেন। আমরাও প্রস্তুত রয়েছি মাঠ পর্যায়ে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট পরিচালনা ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা সরবরাহের জন্য। তবে আশা করা যাচ্ছে এবার মৃত্যুর মিছিল হবে কম।

Advertisement

ফয়সাল আহমেদ/এফএ/জেআইএম