ঋণমুক্তির জন্য আছে দোয়া ও আমল। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসব দোয়া ও আমল শিখিয়েছেন। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা প্রমাণিত। ঋণ পরিশোধের চেষ্টা করার পাশাপাশি হাদিসে বর্ণিত দোয়ার আমলগুলো খুবই কার্যকরী। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-
Advertisement
১. হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু কাছে এক ব্যক্তি ঋণমুক্তির জন্য সাহায্য প্রার্থনা করলে তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে কিছু বাক্য শিখিয়ে দিয়েছেন, আমি তোমাকে তা শিখিয়ে দিচ্ছি; যদি তোমার পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকে তবে আল্লাহ তাআলা তোমার পক্ষ থেকে তা আদায় করে দেবেন এবং তোমাকে ঋণমুক্ত করবেন। তুমি বলবে-
اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাকফিনি বিহালালিকা আ’ন হারামিকা ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াকা।’
Advertisement
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি আপনার হালাল প্রদান করে আমাকে হারাম থেকে রক্ষা করুন এবং আপনার দয়া ও বরকত প্রদান করে আমাকে আপনি ছাড়া অন্য সবার অনুগ্রহ থেকে মুক্ত করে দিন।’ (তিরমিজি, মুসতাদরাকে হাকেম)
২. হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশি বেশি দোয়াটি পড়তেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ، وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি; ওয়াল আ’ঝযি, ওয়াল কাসালি; ওয়াল বুখলি ওয়াল ঝুবনি; ওয়া দালাই’দ দাইনি; ওয়া গালাবাতির রিঝালি।’
Advertisement
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় গ্রহণ করছি দুশ্চিন্তা, দুঃখ-বেদনা, মনোকষ্ট, অক্ষমতা, অলসতা, কৃপণতা, কাপুরুষতা, ঋণের বোঝা এবং মানুষের প্রাধান্য বা প্রভাবের অধীনতা থেকে।’ (বুখারি)
৩. হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু আও বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনুহকে বললেন, ‘যদি তুমি এই দোয়াটির (আমল করে) প্রার্থনা কর তাহলে তোমার পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকলেও আল্লাহ তাআলা তা তোমার পক্ষ থেকে আদায় করে দেবেন-
اللَّهُمَّ مَالِكُ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَنْ تَشَاءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَاءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَاءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَاءُ بِيَدِكَ الْخَيْرِ إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ رَحْمَانُ الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ تُعْطِيهُمَا مَنْ تَشَاءُ وَتَمْنَعُ مِنْهُمَا مَنْ تَشَاءُ ارْحَمْنِي رَحْمَةً تُغْنِينِي بِهَا عَنْ رَحْمَةِ مَنْ سِوَاكَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা, মালিকাল মুলকি, তু’তিল মুলকা মান তাশাউ ওয়া তানযিউল মুলকা মিম্মান তাশাউ। ওয়াতু ই’যযু মান তাশাউ ওয়া তুজিল্লু মান তাশাউ বি-ইয়াদিকাল খাইরু ইন্নাকা আ’লা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির। রাহমানুদ দুনইয়া ওয়াল আখিরাতি তু’ত্বিহুমা মান তাশাউ ওয়া তামনাউ মিনহুমা মান তাশাউর-হামনি রাহমাতান তুগনিনি বিহা আন রাহমাতি মান সিওয়াকা।’
অর্থ : ‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন- হে রাজাধিরাজ আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব কেড়ে নাও, যাকে ইচ্ছা সম্মানিত কর এবং যাকে ইচ্ছা অপমানিত কর। তোমার হাতেই যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। দুনিয়া এবং পরকালের মহাকরুণাময় ও অপার দয়াশীল, তুমি যাকে ইচ্ছা এই করুণারাজী প্রদান কর এবং যাকে ইচ্ছা বঞ্চিত কর। তুমি আমাকে এমন রহমত প্রদান কর, যে রহমত আমাকে তুমি ছাড়া অন্য কারো করুণা থেকে অমুখাপেক্ষী বানিয়ে দেবে।’ অর্থাৎ ঋণমুক্ত হতে সাহায্য করবে।’ (তাবারানি, আল-মুজামুল কাবির, আত-তারগিব, মাজমাউয যাওয়ায়িদ)
আল্লাহ তাআলা সবাইকে ঋণমুক্ত হতে সব সময় হাদিসে নির্দেশিত দোয়ার আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। ঋণমুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম