সাভার উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত এক প্রার্থীসহ ২৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন। নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী, মোট প্রদত্ত ভোটের আটভাগের একভাগ ভোট না পাওয়ায় তাদের এ জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।
Advertisement
নির্বাচন অফিসের সূত্র বলছে, ১১টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে লড়েছেন মোট ৫৩ জন প্রার্থী। এর মধ্যে একজন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ১০টি ইউনিয়নে ৫২ জন প্রার্থী মাঠে ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন আওয়ামী লীগ প্রার্থীসহ ২৭ জনই হারাচ্ছেন জামানত। এদের মধ্যে উপজেলার বিরুলিয়া ও শিমুলিয়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন।
প্রাপ্ত তথ্য বলছে, কাউন্দিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মেশের আলী ৮৫৮ ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। একই ইউনিয়নে আরও জামানত হারাচ্ছেন মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে সতন্ত্র প্রার্থী সাহাবুদ্দিন কবিরাজ। তার প্রাপ্ত ভোট ১১৬টি।
আমিন বাজার ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা শফিকুর রহমানের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তার প্রাপ্ত ভোট ৪১৯ ভোট।
Advertisement
ভাকুর্তা ইউনিয়নে চারজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। এদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের নাছির উদ্দিন পেয়েছেন ৫৪ ভোট, মোটরসাইকেল প্রতীকের নুরুল আমিন ৭৯৮, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে মাহমুদুল হাসান এক হাজার ৫২৬ ও টেবিল ফ্যান প্রতীকে শহিদুল ইসলাম ৮৫ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।
বনগাঁও ইউনিয়নে দুইজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। এদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের মোক্তার হোসেন ৪৩৪ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতীক নিয়ে সাইফ উদ্দিন পেয়েছেন দুই হাজার ৪৫৬ ভোট।
সাভার সদর ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকের মাহমুদ বিশ্বাস ৫৯০ ভোট পেয়েছেন। তার জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।
বিরুলিয়া ইউনিয়নে পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন। এদের মধ্যে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে উজির মাহমুদ ১৮৩ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে দুই হাজার ১৩৯, স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকে মহসীন মন্ডল ১৮, মোটরসাইকেল প্রতীকে গিয়াস উদ্দিন ৭৭৪, চশমা প্রতীকে শাহীন মিয়া ৩৩৭ ভোট পেয়েছেন।
Advertisement
পাথালিয়া ইউনিয়নে জামানত হারাচ্ছেন তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। এদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে আলফাজ উদ্দিন সিরনিয়াবাত এক হাজার ৩৪৭, জাকের পার্টি মনোনীত গোলাপ ফুল প্রতীকে ২৭৪ ও সতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতীকে ৪০৭ ভোট পেয়েছেন।
আশুলিয়া ইউনিয়নে জামানত হারিয়েছেন দুই প্রার্থী। এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে আব্দুল কাইয়ুম তিন হাজার ৩৪ ভোট ও জাকের পার্টি মনোনীত গোলাপ ফুল প্রতীকে বদরুল আলম পেয়েছেন ২১১ ভোট।
ইয়ারপুর ইউনিয়নে জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে দুই প্রার্থীর। এদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে মোকলেছুর রহমান তিন হাজার ১৪৪ ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে আল কামরান পেয়েছেন ৮৯৩ ভোট।
সর্বশেষে শিমুলিয়া ইউনিয়নে পাঁচ প্রার্থী তাদের জামানত হারাচ্ছেন। এরা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী টেলিফোন প্রতীকে জাকির হাসান, তার প্রাপ্ত ভোট ৭৬৯টি। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাত পাখা প্রতীকে ফয়েজ হোসেন ৬২৫, স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকে ইকবাল হোসেন ৩৬৮, টেবিল ফ্যান প্রতীকে জিয়াউর রহমান ৩০ ও অটোরিকশা প্রতীকে সাইদুর রহমান ভোট পেয়েছেন ৩০টি।
সাভার উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফখর উদ্দিন শিকদার বলেন, ইউপি নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রত্যেক প্রার্থীকে সরকারি কোষাগারে পাঁচ হাজার টাকা করে জামানত দিতে হয়। সেই জামানতের টাকা ফেরত পেতে হলে ওই ইউনিয়নের প্রদত্ত ভোটের আটভাগের একভাগ পেতে হয়। যেসব প্রার্থী এই পরিমাণ ভোট পায়নি। তাদের জামানতই বাজেয়াপ্ত হবে।
মাহফুজুর রহমান নিপু/কেএসআর/জিকেএস