টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দাদার লাঠির আঘাতে নাতি মো. রিফাত মিয়ার (১৩) মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ইরতা পূর্বপাড়া গ্রামে।
Advertisement
নিহত রিফাত ওই গ্রামের মো. রেজাউল মিয়ার ছেলে। সে সহবতপুর হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, বুধবার বিকেলে সহবতপুর বাজার থেকে রিফাতের বাবা বড় একটি পাঙ্গাশ মাছ কিনে বাড়িতে আনেন। এ সময় রেজাউলের স্ত্রী বলেন, ‘এতো বড় মাছ কিনে আনলা দেইখো এটা নিয়ে কথা সৃষ্টি হবে।’
পাশের ঘর থেকে কথাটি শুনে রিফাতের ছোট চাচি শ্বশুর রাজ্জাকের কাছে বলে দেন। বিষয়টি নিয়ে রিফাতের দাদা রাজ্জাক মিয়ার (৬৫) মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রাজ্জাক মিয়া তার ছেলে রেজাউলের মাছ কিনে আনার বিষয়ে প্রতিবাদ করে।
Advertisement
এক পর্যায়ে রাজ্জাক মিয়া, তার স্ত্রী এবং ছোট ছেলের স্ত্রী মিলে রেজাউল, ছেলে রিফাত ও তার স্ত্রীকে মারপিট করেন। এতে রেজাউল ও রিফাত মাথায় গুরুতর আঘাত পান। এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে নাগরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
রাত অনুমানিক ১টার দিকে চিকিৎসারত অবস্থায় রিফাত মারা যায়। নাগরপুর থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রিফাতের মরদেহ উদ্বার করে টাঙ্গাইল সদর হাসাপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, বুধবার বিকেল তিনটার সময় রিফাত ও তার বাবা রেজাউল মাথায় আঘাত নিয়ে হাসপাতালে এলে তাদের ভর্তি করা হয়। রিফাতের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করি। রিফাতের আত্মীয় স্বজন তাকে টাঙ্গাইল না নিয়ে পাঁচটার দিকে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ সময়ের মধ্যে রিফাত বমিসহ মাথাব্যথা ও চোখে ঝাপসা দেখছে বলে জানায়। তখন আবারও রিফাতকে দ্রুত টাঙ্গাইলে নিতে বলা হয়। কিন্তু তারা না নেওয়ায় পরে অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। রাত একটার দিকে রিফাত মারা যায়।
নিহত রিফাতের বাবা রেজাউল বলেন, আমি ঢাকায় একটি আড়তে কাজ করি। ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসি। বুধবার বিকেলে স্থানীয় সহবতপুর বাজার থেকে একটি পাঙ্গাশ মাছ কিনে আনি। আমার বাবা, মা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সেটা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাদেরকে মারপিট করেন। এ সময় আমার ছেলে রিফাতের মাথায় লাঠি দ্বারা আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়। ওই রাতেই আমার ছেলে রিফাত মারা যায়।
Advertisement
এ বিষয়ে নাগরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
আরিফ উর রহমান টগর/এফএ/জিকেএস