লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এক কিলোমিটার জনগুরুত্বপূর্ণ মাটির রাস্তা কেটে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সেচ প্রকল্পের পাইপ স্থাপন করা হয়েছে। কোনো অনুমতি ছাড়াই প্রজেক্টের ম্যানেজার অজি উল্যার নির্দেশে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ভেক্যু মেশিন দিয়ে রাস্তাটি কেটেছেন। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। একপর্যায়ে তাদের বাধার মুখে সেচ পাইপ অপসারণ করতে বাধ্য হয়।
Advertisement
তবে রাস্তার ক্ষতিতে বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তিতে পড়তে হবে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের উত্তর চরমার্টিন গ্রামে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এ ঘটনায় বিএডিসি কর্তৃপক্ষ ও সেচ প্রকল্পের ম্যানেজার একে-অপরকে দোষারোপ করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, উত্তর চরমার্টিনের ২ নম্বর ওয়ার্ডে বোরো মৌসুমের জন্য বিএডিসির একটি সেচ প্রকল্প নেন অজি উল্যা। তিনি চরমার্টিন ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি। ৪ দিন আগে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ওই প্রকল্পের পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ শুরু করেন। উত্তর চরমার্টিন বাজার সংলগ্ন জনগুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল রাস্তাটি ভেক্যু মেশিন দিয়ে কেটে সেচ পাইপ বাসানো হয়।
স্থানীয়রা এতে প্রতিবাদ করেন। রাস্তা না কেটে ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে পাইপ লাইন স্থাপনের দাবি জানিয়ে তারা কাজে বাধা দেন। তাদের দাবির মুখে রাস্তা থেকে পাইপ অপসারণ করতে বাধ্য হয় ঠিকাদারের লোকজন। যদিও এরই মধ্যে এক কিলোমিটার রাস্তা কেটে নষ্ট করা হয়েছে।
Advertisement
স্থানীয় লোকজন জানান, সেচ পাইপলাইন ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে বসানোর ব্যবস্থা থাকলেও প্রজেক্ট ম্যানেজার অজি উল্যার নির্দেশে এলজিইডির এ রাস্তাটি কেটে ফেলা হয়। এতে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি হবে। দিনে হাজার হাজার মানুষ এবং বিভিন্ন যানবাহন এখান দিয়ে চলাচল করে। অজি উল্যা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না।
সেচ প্রজেক্ট ম্যানেজার অজি উল্যা বলেন, বিএডিসির ইঞ্জিনিয়ার এসে রাস্তার পাশ দিয়ে পাইপ লাইন বসানোর জন্য দেখিয়ে দিয়েছে। আমরা সেভাবেই কাজ করেছি। এলাকাবাসী আপত্তি তোলায় এখন আবার পাইপ অপসারণ করা হয়েছে। আমার রাজনৈতিক কারণে কাজ করতে গিয়ে বাধার শিকার হতে হয়েছে। রাস্তার ক্ষতির ব্যাপারে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।
এলজিইডির লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহ আলম পাটওয়ারী বলেন, সড়ক কেটে ফেলার বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। বিএডিসি কোনো অনুমতি না নিয়ে সেচ পাইপলাইন স্থাপনের কাজ করেছে। আমরা আপত্তি তোলায় তারা পাইপ অপসারণ করে ফেলেছে। তবে রাস্তাটি সংস্কার করে দেওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী (সেচ) মো. জুয়েল হোসেন বলেন, প্রজেক্ট ম্যানেজার অজি উল্যা ইচ্ছামতো রাস্তার ওপর দিয়ে পাইপলাইন বসিয়েছেন। এতে আমাদের কোনো নির্দেশনা ছিল না। এলজিইডির আপত্তি থাকায় ঠিকাদারকে পাইপলাইন অপসারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রজেক্ট ম্যানেজার ও ঠিকাদার রাস্তাটি সংস্কার করে দেবে বলেছেন।
Advertisement
কাজল কায়েস/এফএ/জিকেএস