অর্থনীতি

বেড়েই চলেছে সূচক, ৩২ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন

নতুন বছরের শুরুতে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দেশের শেয়ারবাজার। মূল্যসূচক টানা বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি। নতুন বছরের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (৫ জানুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে।

Advertisement

সূচক বাড়ার পাশাপাশি দুই বাজারেই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এমনকি ডিএসইতে প্রায় দেড় মাস বা ৩২ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।

ডিএসইতে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বস্ত্র, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য, প্রকৌশলসহ বেশিরভাগ খাতের সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়লেও বিমা ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডে ছিল বিভিন্ন চিত্র। এই দুই খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে।

অবশ্য এর মধ্যেই আটটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এরপরও লেনদেনের এক পর্যায়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের বিক্রেতা সংকট দেখা দেয়।

Advertisement

এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৯২৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আগের তিন কার্যদিবসে সূচকটি বাড়ে ১৩৫ পয়েন্ট। এর ফলে নতুন বছরের প্রথম চার কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বাড়লো ১৭১ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও। এই সূচকটি আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৫৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪১৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ১৮২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৩১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

Advertisement

লেনদেন শুধু আগের দিনের তুলনায় বাড়েনি ৩২ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। এর আগে গত বছরের ২১ নভেম্বর ডিএসইতে ১ হাজার ৭৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর বুধবারের আগে বাজারটিতে আর ১৪’শ কোটি টাকার লেনদেন হয়নি।

লেনদেন বাড়ার বাজারে টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১০০ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৭০ কোটি ৮৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬৭ কোটি ৩৯ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- পাওয়ার গ্রিড, সাইফ পাওয়ার, জিএসপি ফাইন্যান্স, অ্যাকটিভ ফাইন, জিপিএইচ ইস্পাত, লাভেলো আইসক্রিম এবং পেনিনসুলা চিটাগাং।

দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমায় ৮ প্রতিষ্ঠানএদিন ডিএসইতে ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২১টির। আর ৩৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এর মধ্যে ৫১টি প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশের ওপরে। যার মধ্য থেকে আটটির শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। এমনকি এক পর্যায়ে এই আট কোম্পানির শেয়ারের বিক্রেতাও উধাও হয়ে যায়।

এর মধ্যে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, রবি, ন্যাশনাল হাউসিং ফাইন্যান্স, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, মেট্রো স্পিনিং, ফু-ওয়াং ফুড এবং ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড। এর মধ্যে লাভেলো আইসক্রিম টানা চার কার্যদিবস দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করলো।

সিএসইর চিত্রচট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২১৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৪টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এমএএস/এমআরআর/এএসএম