বিনোদন

আমি নির্দোষ: পরীমনি

মাদক মামলায় পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মাধ্যমে শুরু হলো এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ। তবে অভিযোগ গঠনের সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত এ নায়িকা।

Advertisement

বুধবার (৫ জানুয়ারি) ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য করা হয় ১ ফেব্রুয়ারি। পরীমনি ছাড়াও এ মামলার অপর দুই আসামি হলেন- আশরাফুল ইসলাম দিপু ও কবির হোসেন।

এদিন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউর আব্দুল্লাহ আবু পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে শুনানি করেন।

Advertisement

অপরদিকে পরীমনির আইনজীবী নীলঞ্জনা রিফাত সুরভী মামলার দায় হতে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। এছাড়া পরীমনিসহ তিনজনের জামিন চেয়ে করা হয় আবেদন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে পরীমনিসহ তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। তবে অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন করেন

অভিযোগ গঠনের সময় পরীমনিকে বিচারক প্রশ্ন করেন, আপনার বিরুদ্ধে মাদক আইনে অভিযোগ গঠন করা হচ্ছে। আপনি দোষী না নির্দোষ? এসময় পরীমনি বললেন, আমি নির্দোষ।

এরপর বিচারক পরীমনিকে প্রশ্ন করেন, আপনার গাড়ি দিয়ে মাদক সরবরাহ করা হয়েছে, এতে আপনার বক্তব্য কী? এসময় পরীমনি বললেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

Advertisement

২০২১ সালের ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এর আগে একই বছরের ৪ আগস্ট ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে’ অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ওইদিনই রাত ৮টা ১০ মিনিটে পরীমনিকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে র‌্যাব সদরদপ্তরে নেওয়া হয়। সেখানে রাত ১২টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব।

পরদিন ৫ আগস্ট বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে পরীমনি, চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ এবং তাদের দুই সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপু ও সবুজ আলীকে কালো একটি মাইক্রোবাসে করে বনানী থানায় নেওয়া হয়। এরপর র‌্যাব বাদী হয়ে বনানী থানায় পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। পৃথক মামলা হয় রাজ ও তার সহযোগী সবুজ আলীর বিরুদ্ধেও।

র‌্যাবের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সেই মামলায় পরীমনিকে ওইদিনই আদালতে হাজির করা হলে প্রথমে চারদিনের রিমান্ড ও পরে আরও দুই দফায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।

এরপর গত বছরের ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে প্রতিবেদন দাখিল হওয়া পর্যন্ত পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেন। মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়ার প্রায় এক মাস পর ওই বছরের গত ১ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্তি পান এ চিত্রনায়িকা।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মাদকসেবন করতেন। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার’ তৈরি করেন। সেখানে নিয়মিত করতেন ‘মদের পার্টি’। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের সরবরাহ করতেন ও পার্টিতে অংশ নিতেন।

২০১৪ সালে সিনেমায় ক্যারিয়ার শুরু করা পরীমনি এ পর্যন্ত প্রায় ৩০টি চলচ্চিত্র ও বেশ কয়েকটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। পিরোজপুরের মেয়ে পরীমনিকে চলচ্চিত্র জগতে নিয়ে আসেন প্রযোজক রাজ।

২০২১ সালে তারকা অঙ্গনের বেশ কিছু মডেল-অভিনেত্রীর নানা কর্মকাণ্ড ছিল আলোচনার তুঙ্গে। নামীদামী একাধিক মডেল-অভিনেত্রীর আনাগোনায় সরগরম ছিল আদালতপাড়া। কখনো চিত্রনায়িকা পরীমনি বা একা আবার কখনো পিয়াসা ও মৌদের মতো মডেলদের ঘিরে উত্তপ্ত ছিল আদালত প্রাঙ্গণ।

ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগকে কেন্দ্রে করে গত বছর প্রথম আলোচনায় নাম আসে পরীমনির। গত ৮ জুন রাতে বোট ক্লাবের ওই ঘটনায় ১৪ জুন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। এ মামলায় নাসির ও অমিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর দুই মাস যেতে না যেতেই মাদক মামলায় খোদ পরীমনিকেই আটক করে র‌্যাব।

জেএ/জেডএইচ/এমএস