জাতীয়

লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ১৭ সদস্যের নাগরিক তদন্ত কমিটি

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন, দায়ীদের চিহ্নিতকরণ এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকিমুক্ত জনবান্ধব নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট নাগরিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Advertisement

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলন এবং নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ ১৫টি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি এবং পরিবেশ, নদ-নদী, নৌ-যোগাযোগ ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়।

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির কলাবাগানে পবা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এই কমিটি ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে কমিটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খানকে নাগরিক তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির সদস্য সচিব ও প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পেয়েছেন যথাক্রমে নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুল এবং সাংবাদিক, লেখক ও নৌপরিবহন বিষয়ক গবেষক আশীষ কুমার দে। কমিটিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মীর তারেক আলী, পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক এবং যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো’র ভি শিপ্স এর সাবেক প্রধান নৌপ্রকৌশলী মো. আবদুল হামিদ।

Advertisement

এছাড়া নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, বিআইডব্লিউএ’র সাবেক সচিব সৈয়দ মনোয়ার হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নিশাদ মাহমুদ, কালের কণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নিখিল ভদ্র, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের (নাসাফ) সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, আইনজীবী ও গবেষক অ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্ত, কোস্ট ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল আকন্দ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, বিআইডব্লিউটিএ’র সাবেক কর্মকর্তা প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ ও পুরান ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরামের আহ্বায়ক মো. নাজিম উদ্দিনকে নাগরিক তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আশীষ কুমার দে বলেন, নাগরিক তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করার পর সুপারিশমালাসহ এই প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট সংস্থা/অধিদপ্তরগুলো, নৌযান মালিক সমিতি এবং নৌযান শ্রমিক সংগঠনগুলোর কার্যালয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুজন আইনজীবীর করা আলাদা দুটি রিট পিটিশন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় নাগরিক কমিটির প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আদালতের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উপস্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এ সময় আবু নাসের খান বলেন, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের প্রকৃত কারণ উদঘাটন, দায়ীদের চিহ্নিতকরণ এবং ভবিষ্যতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিমুক্ত জনবান্ধব নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মো. শহীদ মিয়া, ব্যারিস্টার নিশাদ মাহমুদ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী প্রমুখ।

গত ২৩ ডিসেম্বর দিনগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আহত রয়েছেন শতাধিক যাত্রী, নিখোঁজও আছেন অনেকে। আহতদের রাজধানীসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

Advertisement

এইচএস/ইএ/এমএস