খেলাধুলা

এবাদতের যে যোগ্যতা আছে, তার প্রমাণ দিয়েছে সে: লিটন

ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং করলেন আজ এবাদত হোসেন। বাংলাদেশের এই ফাস্ট মিডিয়াম বোলার এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ১১ টেস্ট। এর মধ্যে তার সেরা বোরিং ৯১ রান দিয়ে ৩ উইকেট। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই একটু খরুচে বোলার তিনি। যে কারণে সমালোচনারও শেষ ছিল না। যদিও নির্বাচকরা বারবার টেস্টে তার ওপরই আস্থা রাখছিলেন।

Advertisement

অবশেষে সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন বাংলাদেশের এই পেসার। ১৭ ওভার বল করে ৩৯ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের চারটি উইকেট। এখনও পর্যন্ত যা তার ক্যারিয়ার সেরা। কিউইদের যে ৫ উইকেট পড়েছে তার চারটিই নিলেন এবাদত। বাকি ৫ উইকেটের মধ্যে একটি নিতে পারলেও ক্যারিয়ারে প্রথম ফাইফার নেয়ার কৃতিত্ব দেখাবেন তিনি।

এবাদতকে এই জায়গায় আসতে অনেক কষ্ট, অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। সে সময়টার কথাই আজ দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে উল্লেখ করলেন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটার লিটন দাস।

সংবাদ সম্মেলনেই লিটনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এবাদতের বোলিং এভারেজ অনেক হাই ছিল, সেটি নিয়ে দলের ভেতর কোন হতাশা কাজ করছিল কি না? জবাব দিতে গিয়ে কিছু অপ্রিয় সত্য কথা তুলে এনেছেন লিটন। খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত সুযোগ দেয়ার দাবিও তুলেছেন তিনি।

Advertisement

লিটন দাস বলেন, ‘দেখেন ভাইয়া, আমি যখন প্রথম প্রথম ক্রিকেট শুরু করেছিলাম, আমার পারফরম্যান্স কিন্তু ততোটা ভাল ছিল না। ইনফ্যাক্ট বাংলাদেশে এখন যে দলটা খেলছে, সবারই যে পারফরম্যান্স খুব একটা ভাল তা কিন্তু না। তাই প্লেয়ারদেরকে সুযোগ দিতে হবে। একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে আমরা যখন টেস্ট খেলি, কতদিন পরপর খেলি?’

পরক্ষণেই এবাদতকে নিয়ে কথা বলেন লিটন। তিনি বলেন, ‘সে (এবাদত) একটা ফরম্যাটেই খেলে, অনেক সময় বাংলাদেশে খেলা হলে খেলে, আবার না হলে খেলে না। সো এই জিনিসগুলা মাথায় রাখতে হবে যে একটা পেস বোলারের জন্য সবসময় সব কিছু অনুকূলে থাকে না। হ্যাঁ তার হয়তো এভারেজটা একটু বেশি, ইকোনোমি একটু বেশি ছিল, কিন্তু তার যে যোগ্যতা আছে, সে যে ভাল বোলার সেটি সে আজ প্রমাণ করেছে। সামনেও সে প্রমাণ করবে, এই বিষয়ে আমি বেশ আশাবাদী।’

এবাদতকে আরও সময় দেয়ার দাবি তুললেন লিটন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় তাকে একটু সময় দেয়া উচিত। আমি যা দেখলাম, ওর ম্যাচ ১১টা কি ১২টা (এটা নিয়ে ১১ ম্যাচ)। আমার মনে হয় একটা টেস্ট খেলোয়াড়ের ১৫-১৭ ম্যাচ লাগে তার অভিজ্ঞতাটা আনতে, ক্রিকেটটাকে বুঝতে। তাই আমার মনে হয় ওই সময়টা তাকে দেয়া উচিত।’

এবাদতের বোলিং আজ দুর্দান্ত ছিল। তার চমৎকার দুটি স্পেলই বাংলাদেশকে চালকের বসিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন লিটন। তার স্পেল সম্পর্কে লিটন বলেন, ‘ডেফিনেটলি আমাদের যতগুলা বোলার বল করেছে সবাই একই লেন্থে, আমাদের যেই পরিকল্পনা ছিল যে অনুযায়ী বল করেছে। এবাদত আজকে দুর্দান্ত ছিল। ওর দুটো স্পেলই চমৎকার ছিল। আমার মনে সে একই জায়গায় বল করার কারনে অনেক হেল্প পেয়েছে। তার ব্রেক থ্রু আমাদের দলকে অনেক বুস্ট আপ করেছে। আমরা এখন যে অবস্থায় আছি আমরা ওভার এক্সাইটেড না, আমাদের এখনও পাঁচ উইকেট নিতে হবে, যত কম রান দেয়া যায়, এই রানটা আমাদের চেজ করতে হবে।’

Advertisement

পেস বল করে উইকেট থেকে দারুণ হেল্প পেয়েছেন এবাদত হোসেন। এ নিয়ে লিটন দাসের বক্তব্য, ‘নরমালি আপনি যদি দেখেন আজকের উইকেটে বলটা কিছুটা নিচে এবং কিছু বল স্কিড করছিল। আমরা সাধারণত জানি, যে জায়গাটাতে বল করলে বলের গতি ১৩৮-১৪০ এভারেজ থাকে বোলিং। এবাদেতের প্ল্যান ছিল, রান বাই রান বল করা। যদি সেখান থেকে আপ এন্ড ডাউন করে তাহলে লেগ বিফোর বা বোল্ডের চান্স থাকবে। আর এই জিনিসটা আমরা বুস্ট আপ করছিলাম পেছন থেকে। যেমন শান্ত বারবার বলছিল যে, জোরে জোরে। কারণ ও যত জোরে বল করছিল, উইকেট থেকে তত হেল্প পাচ্ছিল।’

আইএইচএস/