খেলাধুলা

ইডেনে লক্ষ্মণের ইনিংসটাই ৫০ বছরে সেরা

ইসএসপিএন ‘ক্রিকেট মান্থলি’র নয়া উদ্যোগ, গত ৫০ বছরে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা ইনিংস কোনটি- বাছাই করে নেয়া। এ জন্য গঠন করা হলো ২৫ সদস্যের প্যানেল। যাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক ক্রিকেটার, সাংবাদিক, ব্রডকাস্টার, ইতিহাসবীদ এবং পরিসংখ্যানবীদ। ২৫ সদস্যের বাছাইয়ে শেষ পর্যন্ত ৫০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে সেরা টেস্ট ইনিংস হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন, ২০০১ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা ভিভিএস লক্ষ্মণের ২৮১ রানের ইনিংসটি।কেন, এটাকে প্রায় অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সমযে শীর্ষে তুলে আনা হলো? খুব সোজা, যে টেস্টে ২৭৪ রানের পিছিয়ে থেকে ফলোঅন করতে হয়েছিল ভারতকে। এমন একটি দলের বিপক্ষে, যাদেরকে টেস্ট ইতিহাসে অন্যতম সেরা দল বিবেচনা করা হয়। স্টিভ ওয়াহর নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া। যারা আবার টানা জয়ের রেকর্ড গড়েছিল ওই সময়। স্বাভাবিকভাবেই র্যাংকিংয়ের শীর্ষে।সেই দলটির সামনে প্রথম ইনিংসে নাস্তানবুধ হতে হচ্ছিল স্বাগতিক ভারতের ব্যাটিং লাইনআপকে। প্রথম ইনিংসেই ২৭৪ রানের পিছিয়ে পড়ে ফলোঅন। যেভাবে খেলছিল ভারত, তাতে পরাজয়ই নিশ্চিত ভেবে নিয়েছিল সবাই। ওই অবস্থান থেকে, হঠাৎই ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। দুই কিংবদন্তী রাহুল দ্রাবিড় আর ভিভিএস লক্ষ্মণ। ৩৭৬ রানের এক মহাকাব্যিক জুটি গড়ে তারা দু’জন ভারতকে জয়ই এনে দেন ১৭১ রানের বিশাল ব্যবধানে। ভারতের ওই পারফরম্যান্স সত্যি সত্যি ক্রিকেট ইতিহাসে এক স্মরণীয় ঘটনা। লক্ষ্মণের ২৮১ রানের সঙ্গে রাহুল দ্রাবিড় করেন ১৮০ রান। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৪৪৫ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ভারত অলআউট হয়ে গিয়েছিল ১৭১ রানে। ৫৯ রান করেন ভিভিএস লক্ষ্মণ। ফলো অনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার সুন্দর দাস এবং সদাগোপ্পান রমেশের উইকেট হারায় ৯৭ রানের মাথায়। এরপর শচীন টেন্ডুলকারও আউট হয়ে যান ১১৫ রানের মাথায়। ১১৭ রানের জুটি গড়েন লক্ষ্মণ আর গাঙ্গুলি। ৪৮ রান করে আউট হন তখনকার ভারত অধিনায়কও। এরপরই দ্রাবিড়ের সঙ্গে জুটি বাধেন লক্ষ্মণ। ৩৭৬ রানের মহাকাব্যিক জুটিটা ওই সময়ই খেলেছিলেন তারা দু’জন। ভারতের রান গিয়ে দাঁড়ালো ৭ উইকেটে ৬৫৭ রানে। এ সময় ইনিংস ঘোষণা করেন গাঙ্গুলি। জয়ের জন্য ৩৮৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়াই অলআউট হয়ে গেলো ২১২ রানে। অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচটিতে জয় পেয়ে গেলো ভারত। ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে সিরিজে সমতা ফেরালো স্বাগতিকরা, শুধুমাত্র লক্ষ্মণের অসাধারণ ইনিংসটির কারণে।ওই ইনিংসটি স্মরণ করে অসি কিংবদন্তী শেন ওয়ার্ন একবার লিখেছিলেন, ‘আমি পা বরাবর বোলিং করছিলাম তখন। অথচ সেই বলটাই লক্ষ্মণ পেটাচ্ছিল কভারের ওপর দিয়ে কিংবা মিড উইকেটের ওপর দিয়ে আচড়ে ফেলছিল বাউন্ডারির বাইরে। ওই সময় সত্যিই বোলিং করাটা খুব কঠিন হয়ে গিয়েছিল আমার জন্য।’আইএইচএস/আরআইপি

Advertisement