খেলাধুলা

১৮ বছরের ক্যারিয়ার শেষে থামার ঘোষণা দিলেন ৪১ বছরের হাফিজ

২০০৩ সালের এপ্রিলে যাত্রা শুরু। অনেকটা সাকলায়েন মোস্তাকের স্টাইলে বোলিং করতেন। ব্যাটার হিসেবেও ছিলেন দারুণ। একজন স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে যাত্রা শুরু করেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। ১৮ বছরের অভিযানে পাকিস্তানের হয়ে মোহাম্মদ হাফিজ শেষ ম্যাচটি খেলেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনাল।

Advertisement

এরপর বাংলাদেশ সফর থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করেন। খেলেননি ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও। শেষ পর্যন্ত নতুন বছরে এসে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ঘোষণা দিলেন পাকিস্তানের ৪১ বছর বয়সী ক্রিকেটার মোহাম্মদ হাফিজ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। তবে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট এখনও চালিয়ে যেতে চান এই টপ অর্ডার ব্যাটার এবং অফ স্পিনার। সম্প্রতি তিনি খেলে এসেছেন শ্রীলঙ্কার এলপিএল। পাকিস্তানের পিএসএলে তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন লাহোর কালান্দার্সের সঙ্গে।

১৮ বছরের ক্যারিয়ারে মোহাম্মদ হাফিজ খেলেছেন ৫৫ টেস্ট, ২১৮ ওয়ানডে এবং ১১৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে রান সংগ্রহ করেছেন ১২ হাজার ৭৮০।

Advertisement

এর মধ্যে ৩২বার তিনি জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মধ্যে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি রয়েছেন চার নম্বরে। বাকি তিনজন হলেন শহিদ আফ্রিদি ৪৩ বার, ওয়াসিম আকরাম ৩৯ বার এবং ইনজামাম-উল হক ৩৩বার।

এছাড়া ৯বার তিনি নির্বাচিত হয়েছেন প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ কিংবা টুর্নামেন্টে। যৌথভাবে এই জায়গায় তিনি রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। তার সঙ্গে সমানভাবে সিরিজ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন ইমরান খান, ইনজামাম-উল হক এবং ওয়াকার ইউনুস।

পাকিস্তান দলে সবচেয়ে সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে খেলে যাচ্ছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ এবং শোয়েব মালিক। যদিও তারা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন, এই বিশ্বকাপটাই তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ। তবুও, মোহাম্মদ হাফিজ সোমবার পর্যন্ত সময় নিলেন অবসরের ঘোষণা দিতে। অবশেষে আজ এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই ঘোষণা দিলেন তিনি।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন হাফিজ। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানের নির্বাচকরা সিদ্ধান্ত নেয়, হাফিজকে আর ওয়ানডে দলেও নেয়া হবে না। ওয়ানডেতে তিনি নিজের শেষ ম্যাচটি খেলেন লর্ডসে বাংলাদেশের বিপক্ষে। এর আগে তিনি ঘোষণা দেন, ২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই হবে পাকিস্তান জাতীয় দলের হয়ে তার সর্বশেষ অ্যাসাইনমেন্ট। কিন্তু করোনার কারণে বিশ্বকাপ এক বছর পিছিয়ে যায়, যে কারণে হাফিজের অবসর ঘোষণাও পিছিয়ে যায় এক বছর।

Advertisement

২০১৮ সালে টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়লেও ২০২০ সালে এসে বাংলাদেশের বিপক্ষে আবারও দলে ডাক পান। ২০২০ সালটা তিনি শেষ করেন টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রান নিয়ে। ৮৩ গড়ে ১৫২ স্ট্রাইক রেটে তিনি ১০ ম্যাচে রান করেন ৪১৫।

পাকিস্তানের হয়ে সবগুলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই অংশ নেন মোহাম্মদ হাফিজ। এর মধ্যে ২০০৯ সালে বিশ্বকাপও জিতেছেন তিনি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে হাফিজ ছিলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক এবং সেবার তার দল বিদায় নেয় গ্রুপ পর্ব থেকেই। এছাড়া বিশ্বকাপের বাকি সব আসরে পাকিস্তান অন্তত সেমিফাইনাল খেলেছিল।

অফ স্পিনার হিসেবেও ছিলেন বেশ সমীহ জাগানো বোলার। টেস্টে নিয়েছেন ৫৩ উইকেট, ওয়ানডেতে ১৩৯টি এবং টি-টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ৬১ উইকেট।

আইএইচএস/