সুদানে সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশে ফের গুলি চালিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এতে অন্তত দুজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত বেড়ে দাঁড়ালো ৫৬ জনে। খবর আল-জাজিরার।
Advertisement
স্থানীয় সময় রোববার (২ জানুয়ারি) দেশটির রাজধানী খার্তুম ও পার্শ্ববর্তী শহর ওমদুরমানে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। দেশটির চিকিৎসকদের সংগঠন ‘দ্য সেন্ট্রাল কমিটি অব সুদানিজ ডক্টরস-সিসিএসডি’ এ তথ্য জানিয়েছে।
সিসিএসডির বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার রাজধানী খার্তুমে কয়েক হাজার মানুষ সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রথমে টিয়ার গ্যাস এবং পরে অতর্কিত গুলি চালায়। এতে মাথায় গুলিবিদ্ধ এক তরুণ নিহত হন। এছাড়া পার্শ্ববর্তী শহর ওমদুরমানেও বিক্ষোভে গুলি চালায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এসময় বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে আরেকজনের মৃত্যু হয়।
গত ২৫ অক্টোবর দেশটির শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি করে ক্ষমতা দখল করেন জেনারেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লা হামদককে গৃহবন্দি ও বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে গ্রেফতারের পাশাপাশি দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি।
Advertisement
অরাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। সুদানে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সরব হয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা।
অন্যদিকে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে হাজার হাজার সুদানিজ। বিক্ষোভকারীদের দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কঠোর অবস্থান নেয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এদিকে, সুদানিজদের বিক্ষোভ ও বৈশ্বিক চাপের মুখে গত ২২ নভেম্বর ক্ষমতাচ্যুত সুদানের প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লা হামদককে স্বপদে ফিরিয়ে আনেন দেশটির সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। দেশটির সেনাপ্রধানের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের চুক্তিও হয়। তবে বেসামরিক সরকারকে ‘স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না’ অভিযোগ তুলে দেশটিতে এখনো সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভ করছেন সুদানিজরা।
সুদানে তিন দশক ধরে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় ছিলেন ওমর আল-বশির। ২০১৯ সালে ওমর আল-বশির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর ক্ষমতা ভাগাভাগি করে দেশ পরিচালনা করছিল সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক সরকার।
Advertisement
এএএইচ