৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যা দিয়ে গেল বছর হার্ড লাইনে থাকলেও এবার কঠোর কোন কর্মসূচিতে যাচ্ছে না ২০ দলীয় জোট সমর্থিত বিএনপি। দলীয় সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গেছে।সূত্র জানায়, বিএনপিকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি না দিলে এবার হার্ড লাইনে না যাওয়ার চিন্তা করছেন তারা। কারণ কর্মসূচি দিয়ে সফলতার মুখ দেখা তো দূরের কথা ঘোষণা ছাড়াই কর্মসূচি অচলের অভিজ্ঞতার কথা ভুলেনি দলটি। সেক্ষেত্রে বিকল্প কর্মসূচির পরিকল্পনা করছেন তারা।এর আগে গত বছর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ডাকা কর্মসূচি সফল না হওয়ায় সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই এবার সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর মাস হিসেবে নতুন বছরের শুরুতেই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো নতুন করে করার চিন্তা করছে বিএনপির হাইকমান্ড। দ্রুত কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শেষে নানা ইস্যুতে আবারো রাজপথে সক্রিয় হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর টানা অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি দিয়েও সফল না হওয়ার কারণ হিসেবে সাংগঠনিক দুর্বলতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই সব কিছু না গুছিয়ে হুট করে ফের আন্দোলনে নেমে হামলা মামলার মুখোমুখি হতে চাচ্ছেন না তারা।অন্যদিকে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অংশ হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আরো সক্রিয় হয়ে মাঠে নামার টার্গেট রয়েছে বিএনপির। তাই ভঙ্গুর বিএনপি কোনভাবেই হার্ড লাইনে যাওয়ার চিন্তা করছে না।এদিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে এখনো ইতিবাচক সাড়া পায়নি বিএনপি। পাশাপাশি একইস্থানে একইদিন ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ উল্লেখ করে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অবশ্য পরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বিকল্প স্থান হিসেবে সমাবেশ করতে চাইছে তারা।তবে একইস্থানে সমাবেশ ডাকলেও সেই স্থান থেকে সরে এসে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার কথা ভাবছে বিএনপি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোন পথে না হেটে কোন ধরনের হুমকি ছাড়াই সমাবেশস্থল পরিবর্তন করেছে বিএনপি।সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সোহরাওয়ার্দীতেই বিএনপি সমা্বেশ করবে এরকম সিদ্ধান্তে অটল থাকলে পরিস্থিতি হয়তো অন্য দিকেই মোড় নিতো। তবে গত বছরের মতো এবার ততটা হার্ড লাইনে গিয়ে আন্দােলন করার কোন ইচ্ছা নেই বিএনপির। তাই নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে না দিয়ে অন্য কোথাও সমাবেশের অনুমতি দিলেও কর্মসূচি পালন করে দায়মুক্ত হতে চায় তারা। দলের দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জাগো নিউজকে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে চাই। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিতে হবে।সমাবেশের অনুমতি না দেয়া হলে কী ধরনের কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- চূড়ান্তভাবে সমাবেশের অনুমতি দেয়া না হলে পরবর্তীতে কর্মসূচি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হবে।এবছরও খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা হলে কী আবারো অবরোধ হরতালের মতো কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে যথাসময়ে জানানো হবে।এ বিষয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, শেষ পর্যন্ত সমাবেশের অনুমতি না পেলে পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কিন্তু সে কর্মসূচি কোনোভাবেই সাংঘর্ষিক হবে না বলেও জানান তিনি।এমএম/জেডএইচ/এমএস
Advertisement