দেশজুড়ে

ঝিনাইদহে এক বছরে ৬৪ খুন

২০১৫ সালে ঝিনাইদহে ৮১টি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ৬৪ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর বাকি ১৭ জন বিভিন্নভাবে মারা গেছেন। তাদের মৃত্যু নির্ণয়ে ময়নাতদন্ত চলছে। রির্পোট পাওয়া সাপেক্ষে তাদের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।পুলিশ ও অন্যান্য সুত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ৬৪ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। সেখানে ২০১৪ সালে ৬৬টি, ২০১৩ সলে ৬৮টি এবং ২০১২ সালে ৬৬টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। জেলায় খুন হওয়া সাতটি মরদেহের পরিচয় আজও পাওয়া যায়নি। ১৭ জনের মৃত্যু নির্ণয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এদিকে খুনসহ উদ্ধারকৃত মরদেহের মধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ২৬ জন, শৈলকূপায় ১৪, মহেশপুরে ১৫, কোটচাঁদপুরে ৮, কালীগঞ্জে ১৩ ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় পাঁচজন রয়েছেন। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে অনেকের ময়নাতদন্তের পর অপমৃত্যুর আলামত পাওয়া গেছে।পুলিশ ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা আনন্দ ঘোষসহ জেলায় চারজন খুন হয়েছেন। ফেব্রয়ারি মাসে খুন নি আটজন। এর মধ্যে বিএসএফ জোড়া হত্যাকান্ড ঘটায় মহেশপুরের লেবুতলা সীমান্তে, এছাড়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডেফলবাড়ি গ্রামের মাঠে দুলাল ও পালাশ নামে দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়।মার্চ মাসে জেলায় চার জনের লাশ উদ্ধারসহ খুন হয় আটজন, এর মধ্যে কোটচাঁদপুরের ভোমরাডাঙ্গা গ্রামে মুক্তিপণের দাবিতে মাদ্রাসা ছাত্র মিরাজকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে দুর্বত্তরা।এপ্রিল মাসে ৩ টি লাশ উদ্ধারসহ খুন হয় ৬ জন।মে মাসে জেলায় খুনসহ বিভিন্ন ব্যক্তির ১১ টি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ, এরমধ্যে কালীগঞ্জে স্ত্রীর পরকিয়ার শিকার হন রফিউদ্দিন নামে এক মোচিকের কর্মচারী, কোটচাঁদপুরে দলিয় কোন্দলে নিহত হন সোনা মিয়া নামে এক শ্রমিকলীগ নেতা। জুন মাসে চার জন নিহত হন, এরমধ্যে মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গায় বিএসএফর নির্যাতনে জাহাঙ্গীর নামে এক বাংলাদেশী নিহত হন, ব্যাপারীপাড়ার সেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী তরিকুল ইসলামকে শহরের গুলশানপাড়ায় খুন করা হয়। জুলাই মাসে লাশ উদ্ধারসহ নিহত হয় আট জন। এর মধ্যে সদর উপজেলার অচিন্তনগর গ্রামে শিশু মনিরাকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়, আগষ্ট মাসে জেলায় মহিলাসহ ৬ জনের লাশ উদ্ধার হয়, এর মধ্যে শৈলকুপার বড়মৌকুড়ি গ্রামে গ্রাম্য সংঘর্ষে আব্দুল ওহাব নামে এক ব্যক্তি নিহত হন।সেপ্টেম্বর মাসে জেলায় খুনসহ ৯ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর মধ্যে শৈলকুপায় যুবদল নেতা খুন হন। অক্টোবর মাসে ১০ জনের লাশ উদ্ধার হয়। এর মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি এলাকার রেল লাইনে যশোর আওয়ামী লীগের কর্মী এনামুল হককে হত্যা করা হয়। ২০ অক্টোবর একই উপজেলার ফারাশপুর গ্রামে মা তাসলিম ও মেয়ে তাসনিমকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। ২৫ অক্টোবর সদর উপজেলার হাটগোপালপুর এলাকার কাশিমপুর গ্রামে আব্দুল আজিজকে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। ৩১ অক্টোবর সদর উপজেলার ওয়াড়িয়া গ্রামে মীম নামে এক কিশোরীকে হত্যা করা হয়। ১ নভেম্বর মহেশপুর উপজেলায় এরশাদ আলী নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। ২৬ নভেম্বর কালীগঞ্জ যশোর সড়কে মনিরউদ্দীন নামে এক গরু ব্যবসায়ীকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ২৭ নভেম্বর শৈলকুপার বড়বাড়ি গ্রামে মজুমদারপাড়ার ভ্যান চালক মিরাজ হোসেনকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে।লাশ উদ্ধার ও এ সব হত্যাকা- নিয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জাগো নিউজকে জানান, ২০১৫ সালে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বিকভাবে ভালো ছিল। দলাদলি ও সামাজিক বিরোধের কারণে এ সব হত্যাকা- ঘটলেও পুলিশ দ্রুত মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করে আসামিদের আইনে সোপর্দ করতে সক্ষম হয়েছে।এমজেড/এমএস

Advertisement