খেলাধুলা

মাঠেই প্রায়শ্চিত্ত করতে চান আমির

দু’দিন আগেও তাকে নিয়ে বিতর্কে কাঁপছিল পাকিস্তানি ক্রিকেট। দেশের হয়ে মাঠে নামার সুযোগ তার আর পাওয়া উচিত হবে কি-না, এ প্রশ্নে তোলপাড় অন্য ক্রিকেট দুনিয়াও। সেই বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে যখন মোহাম্মদ আমিরকে পাকিস্তান জাতীয় দলে ফিরিয়ে এনে তাকে ‘লাইফলাইন’ দিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড, তখন আর অন্ধকার অতীতের দিকে ফিরে তাকাতে চান না তিনি।যদিও স্বীকার করে নিচ্ছেন নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে তার এই প্রত্যাবর্তনের লড়াইটা সোজা হবে না, তবু নিজের সেরাটাই উজাড় করে দিতে চান আমির।নিউজিল্যান্ডগামী পাক দলে তার থাকার খবরে কলঙ্কিত পাক পেসারের প্রতিক্রিয়া, ‘জানি ফেরার যুদ্ধটা সহজ হবে না। তবে মানসিকভাবে নিজেকে উজাড় করে দেয়ার জন্য আমি প্রস্তুত।’ নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার ভিসা তিনি পাবেন কি-না, তার নিশ্চয়তা এখনও না থাকলেও আমির সে সব নিয়ে ভাবছেনই না। তার মন এখন পুরোপুরি মাঠে।২০১০-এ ইংল্যান্ড সফরে স্পট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত হয়ে শুধু যে জেল খাটতে হয়েছে তা-ই নয়, পাঁচ বছরের ক্রিকেট নিষেধাজ্ঞাও কাটাতে হয়েছে তাকে। ক্রিকেট ইতিহাসের এই জঘন্যতম ও প্রমাণিত অপরাধের পর আমিরকে যে আর দেশের জার্সি গায়ে মাঠে নামতে দেয়া উচিত নয়, এই যুক্তিতে পাকিস্তানের বহু মহারথিও গলা ফাটিয়েছেন।এমনকী দলের মধ্যেও বিদ্রোহের আগুন জ্বলতে শুরু করেছিল। মোহাম্মদ হাফিজ ও আজহার আলি প্রস্তুতি ক্যাম্প ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন আমির দলে ছিলেন বলে। তবে তাদের নিয়ে বেশি চিন্তিত নন আমির। যারা তার পাশে ছিলেন চিন্তা তাদের নিয়েই।আমির বলেন, ‘যারা আমার উপর আস্থা রেখেছেন, আমার হয়ে কথা বলেছেন, তাদের বিশ্বাসের জবাব দিতে পারাটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে গত একবছর ধরে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ে অনেক চর্চা করেছি। মাঠে ব্যাটসম্যানদের আচরণ এখন যে অনেক পাল্টেছে, তাও লক্ষ্য করেছি। এটা এবার কাজে লাগবে, আশা করি।’হাফিজ-আজহারদের বিদ্রোহের পর তিনি তাদের সঙ্গে কথাও বলেছেন বলে জানান। সতীর্থদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন কতোটা অনুতপ্ত তিনি। এ ব্যাপারে আমির বলেন, ‘ওদের সঙ্গে কথা বলার সময় খুব আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি ঠিকই; কিন্তু কথা বলাটা খুবই জরুরি ছিল। টিম ম্যানেজমেন্টও আমাকে সাপোর্ট করবে বলে কথা দিয়েছে।’টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদির প্রশংসা করে আমির জানান, ‘শহিদ ভাই আমাকে বড়ভাইয়ের মতো পাশে দাঁড়িয়ে সাহস জুগিয়েছে। তাকে অজস্র ধন্যবাদ।’অন্যদিকে আমিরের ফেরা নিয়ে আফ্রিদি মন্তব্য করেন, ‘এখন আমাদের সামনের দিকে তাকানোর পালা। আমিরের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আমি জানি ও নিজেকে ফিরিয়ে আনার জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে আর নিজেকে উজাড় করে দেবে।’ টুইট করে পাক টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক আরও বলেন, ‘দলে আমির ফিরে আসায় আমি খুশি।’আর আমির নিজে এখন প্রায়শ্চিত্ত করতে চান, ‘জানি কতোটা ঘৃণ্য কাজ করেছি; কিন্তু এমন কাজ করার পরও যে মাঠে ফিরে প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ পাচ্ছি, এজন্য আল্লাকে ধন্যবাদ। এমন কাজ আর কখনও করবো না। এখন থেকে শুধু বল করা আর উইকেট নেয়াই আমার কাজ। আর কিচ্ছু না।’আইএইচএস/বিএ

Advertisement