ইউরোপে লাতিন ফুটবলারদের প্রতি বর্ণবাদী আচরণ যেন খুব নিয়মিত ঘটনা। আফ্রিকান, লাতিন ফুটবলার এমনকি ইউরোপের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সঙ্গেও বর্ণবাদী আচরণ করে থাকে ইউরোপের দর্শকরা। তবে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে এটা খুব প্রকট আকারে থাকলেও, পশ্চিম ইউরোপ- যেমন স্পেন, ফ্রান্স কিংবা ইংল্যান্ডে তুলনামূলক কম। কিন্তু স্পেনের মাটিতেই বর্ণবাদী আচরণের শিকার হতে হলো ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমারকে। বার্সেলোনা ডার্বিতে এস্পনিওলের মাঠে শনিবার রাতে খেলতে গিয়েছিল বার্সা। ওখানেই এস্পানিওল সমর্থকরা নেইমারকে উদ্দেশ্য করে বানরের মতো আচরণ করে। যা ফুটবলে ঘৃণিত বর্ণবাদী আচরণের সামিল বলে গণ্য করা হয়।স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন কিংবা লা লিগা কমিটির পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে বার্সা মিডফিল্ডার আন্দ্রে ইনিয়েস্তা দাবি করেছেন, ম্যাচের প্রথমার্ধে, মাঠের একটা নির্দিষ্ট কোণ থেকে, একজন দর্শক নেইমারকে উদ্দেশ্য করে বর্ণবাদী মন্তব্য করেছিল। স্প্যানিশ অনেক সাংবাদিকও শনিবার ম্যাচ চলার সময় টুইট করেছেন বিষয়টি নিয়ে। ম্যাচের প্রথমার্ধে নেইমার বল নিয়ে আক্রমণে যাওয়ার সময় স্বাগতিক সমর্থকেরা ব্রাজিল ফরোয়ার্ডকে উদ্দেশ্য করে বানরের মতো আওয়াজ করে। যেটি ফুটবলে খুবই ঘৃণ্য আচরণ বলেই গণ্য।এর আগেও একবার এমন আচরণের শিকার হয়েছিলেন বার্সেলোনার ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দানি আলভেজ। তাকে উদ্দেশ্য করে তো কলাও ছুড়ে মারা হয়েছিল। আলভেজ সেই কলা কুড়িয়ে নিয়ে খেয়ে ফেলে নীরব প্রতিবাদ করেছিলেন। বর্ণবাদী আচরণের ব্যাপকতার কারণে ফিফা ফেয়ার প্লের উদ্দেশ্যে সব সময়ই ‘বর্ণবাদকে না বলুন’ এই স্লোগান মনে করিয়ে দেয়। বর্ণবাদের বিপক্ষে এটা তাদের স্লোগানও। ব্যাপক প্রচারণার কারণে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বর্ণবাদ অনেকটাই কমে এসেছে; কিন্তু কখনো কখনো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। যেমনটা উঠলো বার্সেলোনা ডার্বির সময়।ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ লুইস এনরিকে এই ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি, ‘খেলার বাইরে কোনো কিছু নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। যদি কথা বলি, তাহলে আমি সমালোচিত হবো। যদি নাও বলি, তারপরও আমার সমালোচনা হবে।’ ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে মনে করিয়ে দিলেন, এক-দুজনের কারণে বাকি সমর্থকদেরও এমন বদনাম সহ্য করতে হয়, ‘এমন কিছু হয়ে থাকলে অবশ্যই তাদের শাস্তি দিতে হবে। সব এস্পানিওল সমর্থকই দোষী নয়। তবে যারা করেছে, তাদের এক এক করে খুঁজে বের করতে হবে।’ বার্সেলোনার সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া টনি ফ্রেইক্সাও টুইট করেছিলেন, ‘আশা করি নেইমারের প্রতি এস্পানিওল সমর্থকদের এমন বর্ণবাদী আচরণ রেফারির রিপোর্টে লেখা থাকবে।’নেইমারের পাশাপাশি এস্পানিওল সমর্থকেরা ম্যাচজুড়ে উত্ত্যক্ত করে গেছেন লিওনেল মেসিকেও। স্প্যানিশ আদালতে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের বিরুদ্ধে চলা কর ফাঁকির মামলার দিকে ইঙ্গিত করে স্বাগতিক সমর্থকেরা ম্যাচজুড়েই গেয়ে গেছেন, ‘মেসি, মেসি, তোমার কর পরিশোধ করো’। রোষের মুখে পড়েছিলেন ডিফেন্ডার পিকেও।আইএইচএস/বিএ
Advertisement