দেশজুড়ে

নতুন পাঠ্য বইয়ের দাবিতে পার্বতীপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ঘেরাও

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পাঠ্য বইয়ের দাবিতে আনন্দ স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির কয়েকশ ছাত্র-ছাত্রী ও শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ঘেরাও করে রাখে। রোববার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।এসময় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিষয়টি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে সমাধান করার আশ্বাস দিলে দু’ঘণ্টা অবস্থানের পর তারা উপজেলা চত্বর ত্যাগ করে। আন্দোলনরত শিক্ষক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুূত্রে জানা গেছে, স্কুলের ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করতে ২০০৫ সালে সারাদেশের ৪০টি উপজেলার সঙ্গে পার্বতীপুর উপজেলায় রস্ক (রিচ আউট অব স্কুল চিল্ড্রেন) প্রকল্পের আওতায় ৩৩৭টি আনন্দ স্কুল চালু করা হয়। অভিভাবকদের অজ্ঞতা, অসচেতনতা ও আর্থিক অভাব অনটনের কারণে স্কুলের শিক্ষাগ্রহণ থেকে বঞ্চিত শিশুদের বই পুস্তক, জামা কাপড়, স্কুল ব্যাগ ও নগদ অর্থ প্রদান করে এসব স্কুলে ভর্তি করা হয়। প্রথম শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মাসে ৫০ টাকা এবং ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা মাসে ৮০ টাকা করে পেত, প্রতি শিক্ষক ভাতা হিসেবে মাসে ৩ হাজার টাকা পেতেন। ২০১৫ সালের ৫ম শ্রেণির সমাপানী পরীক্ষায় এসব স্কুলের ৫২৬ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়। প্রকল্পটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন হলেও দেশের প্রতিষ্ঠিত বে-সরকারি সাহায্য সংস্থা (এনজিও) এসব স্কুল মনিটরিং দায়িত্ব পায়। প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৩ সালের শেষ দিকে সারাদেশের ১৮০টি উপজেলার সঙ্গে পার্বতীপুর উপজেলার গ্রামাঞ্চলেও আরো ১০৩টি আনন্দ স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৪ সালে শুরু হওয়া শিক্ষা বর্ষে এসব স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পূর্বের মতই স্কুল ঘর, বই খাতা, পোশাক, শিক্ষা উপকরণ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরও মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়। রোববার দুপুরে এসব স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা বইয়ের দাবিতে পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ঘেরাও করেন। মৌপুর দক্ষিণপাড়া আনন্দ স্কুলের জাহাঙ্গীর আলম, সোনাপুুর মাঝাপাড়া আনন্দ স্কুলের শিক্ষিকা নাহিদা পারভীন ও হোসেনপুর আনন্দ স্কুলের শিক্ষিকা লাভলী বেগম বলেন, স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় আড়াই হাজার ঝরে পড়া শিক্ষার্থী ও শতাধিক বেকারের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আখতারুল ইসলাম বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি। তবে প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) ড. এম মিজানুর রহমান তাকে ফোনে এ প্রকল্পের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এব্যাপারে তিনি স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এমপি’র সঙ্গে যোগাযোগের পরার্মশ দিয়েছেন।আনন্দ স্কুলের প্রশাসনিক ও অর্থ সংক্রান্ত কার্যক্রম মনিটরিং দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর (টিসি) শাজিদ আল মোহিত বলেন, প্রকল্প পরিচালক এর মৌখিক নির্দেশে এসব স্কুলের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। রস্ক প্রকল্পের (আরওএসসি) প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ড. এম মিজানুর রহমান বলেন, স্কুল প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ও তদন্তে সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর টেলিফোনিক নির্দেশে প্রকল্পের ২য় পর্যায়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমদাদুল হক মিলন/এমএএস/আরআইপি

Advertisement