জামালপুরের বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে এখন সরিষা ফুলের অপরূপ দৃশ্য। পুরো মাঠ যেন ঢেকে আছে হলুদের চাদরে। গুন গুন শব্দে হাজার হাজার মৌমাছি ঘুরে বেড়াচ্ছে এক ফুল থেকে আরেক ফুলে। আর চাষিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মধু সংগ্রহে।
Advertisement
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলার মেলান্দহ, সরিষাবাড়ী, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলায় সরিষা ক্ষেতের পাশে শতাধিক বাক্স নিয়ে হাজির হয়েছেন মৌয়ালরা।
জানা গেছে, সাধারণত মৌচাষিরা পছন্দের একটি সরিষা ক্ষেতের পাশে খোলা জায়গায় চাক ভরা বাক্স ফেলে রাখেন। পাশাপাশি বাক্সগুলোর ভেতরে দেওয়া হয় রানি মৌমাছি। যাকে ঘিরে আনাগোনা করে হাজারো পুরুষ মৌমাছি।
রানির আকর্ষণে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা। একটি রানি মৌমাছির বিপরীতে প্রায় তিন থেকে চার হাজারের মতো পুরুষ মৌমাছি থাকে প্রতিটি বাক্সে।
Advertisement
ইসলামপুরের গাইবান্ধা সদরের বাসিন্দা মৌচাষি সামিউল হক বলেন, তারা কয়েকজন মিলে ইসলামপুর উপজেলায় মধু সংগ্রহ করতে এসেছেন। উপজেলার চরপুটিমারী গ্রামের বিস্তীর্ণ সরিষা ক্ষেতে ৫০০টি বাক্স বসিয়েছেন।
এসব বাক্স থেকে প্রতি আট দিনে গড়ে প্রায় ১৫০০ কেজির মতো মধু পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান তিনি। প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চাষিরা চাক মধু সংগ্রহ করেন বলেন জানান তারা।
সিরাজগঞ্জের উল্লাহপাড়া থানার বাসিন্দা সেলিম মিয়া এসেছেন বকশীগঞ্জে মধু আহরণের জন্য, মধু সংগ্রহের পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান, মধু সংগ্রহের জন্য স্টিল ও কাঠ দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি করা হয় বাক্স। যার উপরের অংশটা কালো রঙের পলিথিন ও চট দিয়ে মোড়ানো থাকে।
বাক্সের ভেতরে কাঠের তৈরি সাতটি ফ্রেমের সঙ্গে মোম দিয়ে বানানো বিশেষ কায়দায় লাগানো থাকে এক ধরনের সিট। পরবর্তীতে বাক্সগুলো সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়।
Advertisement
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নিতাই চন্দ্র বণিক জাগো নিউজকে বলেন, এবছর জেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ২২ হাজার ৫০০ এবং অর্জিত হয় ২৬ হাজার ৫৬০।
জেলার প্রতিটি উপজেলাতে মৌয়ালরা এখন মধু আহরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্ষেতের পাশে মৌমাছির চাষ হলে সরিষার ফলন ভালো হয়। এতে একদিকে যেমন মধু বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে ক্ষেতে মধু চাষ করায় সরিষার ফলনও বাড়ছে।
মো. নাসিম উদ্দিন/এমএমএফ/জেআইএম