জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের একমাত্র ভরসা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। তবে উদ্বোধনের পর বছর পার হলেও এখনো হলটি বুঝে পায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। হল নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের পঞ্চম মেয়াদের কাজ চলাকালে গত বছরের ২০ অক্টোবর কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান তড়িঘড়ি করে হলটি উদ্বোধন করেন।
Advertisement
তবে উদ্বোধনের পরও গত এক বছর কাজ চলমান থাকায় হল হস্তান্তর প্রক্রিয়া এখনো সম্পন্ন হয়নি। হলটি উদ্বোধনের আগেই একজন প্রভোস্ট পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে দায়িত্ব শেষ করে অবসরে আছেন। এরপর গত ৫ মার্চ অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শামিমা বেগমকে দুই বছরের জন্য হল প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো হল বুঝে পাননি। সর্বশেষ ৮৫তম সিন্ডিকেট সভায় হলের প্রাথমিক নীতিমালা পাস হলেও সংশোধনী নীতিমালা এখনো ঝুলে আছে। এর মধ্যে হলে ওঠার জন্য ৬২৪টি আসনের বিপরীতে তিন হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরের উপ-প্রকৌশলী শামসুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, এই হলের উদ্বোধন হয়ে গেছে গত বছরের ২০ অক্টোবর। দেড় বছর ধরে আমরা হল বুঝে নেওয়ার জন্য বলছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন হল বুঝে নিচ্ছে না তা আমার বোধগম্য নয়।
জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ আগস্ট বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। ওইদিন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বৈঠকে এক হাজার ছাত্রীর আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে ২০ তলা ফাউন্ডেশনের দুটি টাওয়ার নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রকল্পের প্রথম দফায় মেয়াদ ছিল ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত। দ্বিতীয় মেয়াদ ২০১৩ সালের জুন থেকে ২০১৬ সালের জুন। তৃতীয় দফায় ২০১৬ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয় মেয়াদ। সর্বশেষ ২০১৮ সালের জুন থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। ২০১৯ সালেও কাজ শেষ না হলে ২০২০ সালে অতিরিক্ত সময়ে কাজ চলতে থাকে।
Advertisement
এ বিষয়ে ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, হলের কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কেন যে হস্তান্তর হচ্ছে না তা আমি বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক শামীমা বেগম বলেন, আমি যখন হলের দায়িত্ব পাই তখন ভেবেছিলাম ছাত্রীদের হলে তুলে কাজ শুরু করে দেবো। এখন দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখি এই প্রক্রিয়া অনেক জটিল। হলের কাজ শেষ হওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়ে দেবে। মন্ত্রণালয় বুঝিয়ে দেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে, পরে আমাকে বুঝিয়ে দেবে বিশ্ববিদ্যালয়। এই বুঝে নিতে আর কমিটির সভা করতেই আমার এতো সময় চলে গেলো। অনেক সময় সভা করার জন্য বারবার তাগদা দিয়েও করতে পারি না। আমি চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ে হল চালু করার।
রায়হান আহমেদ/ইএ/এএসএম
Advertisement