দুর্গমতার কারণে রাঙ্গামাটির ৩০-৪০ শতাংশ গর্ভবতীকে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। দুর্গমতাসহ সচেতনতা, ভয়, সংকোচ ও কুসংস্কারের কারণে এসব এলাকার নারীরা হচ্ছেন না হাসপাতালমুখী। ফলে স্থানীয় চিকিৎসা ও ধাত্রীদের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে। এতে বাড়ছে ঝুঁকি।
Advertisement
তবে হাসপাতালে সন্তান প্রসবের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার দশটি হাসপাতালের মাধ্যমে রাঙ্গামাটির প্রায় সাত লাখ মানুষ চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকে। এর মধ্যে গর্ভবতীদের বাচ্চা প্রসবও করানো হয়। গত জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে রাঙামাটিতে দুই হাজার পাঁচশ ৮১ গর্ভবতীর সন্তান প্রসব করানো হয়েছে সরকারি দশ হাসপাতালের মাধ্যমে। এর মধ্যে এক হাজার ৯৮৮ ছিল নরমাল এবং ৫৯৩ ছিল সিজারিয়ান।
জেলা ও উপজেলা সদর কেন্দ্রিক পরিবারগুলো প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারিতে আগ্রহী হলেও গ্রামের অনেক পরিবার এ বিষয়ে আগ্রহী নয়। তারা স্থানীয় ধাত্রী, বৈদ্যদের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করান। তবে যাদের বাচ্চার অবস্থা খারাপ থাকে তাদের সিজার করানো হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সফল হলেও অনেক সময় বাধে বিপত্তি। এতসবের মধ্যেও দুর্গমতার কারণে গর্ভবতীদের বাড়িতে ডেলিভারির হার খুব একটা কমছে না।
Advertisement
বরকল উপজেলার সুবলং ইউপি চেয়ারম্যান তরুণ জ্যোতি চাকমা বলেন, দুর্গম পাহাড়ি গ্রামের সাধারণ মানুষ এখনো গ্রামেই বাচ্চা প্রসব করান। মেজর কোনো সমস্যা না থাকলে বাসায় রেখে সন্তান প্রসবে তারা স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।
তিনি বলেন, বছরখানেক আগে ইউনিয়নের দুর্গম মারমাপাড়ায় এক নারীর বাসায় সন্তান প্রসব করাতে গিয়ে কিছু জটিলতার করণে রাঙ্গামাটি হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা বলেন, জেলায় এখনো অনেক গর্ভবতীকে ঘরেই ধাত্রীদের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হচ্ছে। দুর্গমতা এর প্রধান কারণ। এছাড়া লজ্জা, সংকোচ আর কুসংস্কারের কারণে অনেকেই হাসপাতালমুখী হয় না।
এক মাসের হিসাব টেনে সিভিল সার্জন বলেন, শুধুমাত্র নভেম্বরে জেলার জুরাছড়ি উপজেলা হাসপাতালে ৪০ প্রসূতির প্রসব করানো হয়েছে। জনসংখ্যার অনুপাত হিসাব করলে এ মাসে ওই উপজেলায় ৩০০-৪০০ শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। এ হিসাবে ১০-১৫ শতাংশ শিশু হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেছে। এ অনুপাতে জেলায় এখনো ৩০-৪০ শতাংশ নারীকে ঘরেই প্রসব করানো হচ্ছে। তবে এ ব্যবধান ঘোচাতে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে।
Advertisement
এফএ/এএসএম