দেশজুড়ে

রায়পুরায় সংঘর্ষ : অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পিরিজকান্দী, পীরপুর, মধ্যপাড়া ও বাজুইন্যা পাড়ায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের স্থানীয় রায়পুরা ও পাশ্ববর্তী ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক মাস যাবত এলাকার আধিপত্য নিয়ে মির্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে একই এলাকার আদম ব্যবসায়ী আসাদ মিয়ার দ্বন্দ্ব চলছে। এরই জের ধরে আসাদ মিয়ার লোকজনের হুমকির মুখে স্থানীয় পিরিজকান্দী বাজারে ব্যবসা করতে পারছিলনা মোশাররফ হোসেনের লোকজন। স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর নির্দেশে গত শনিবার বিকেলে পুলিশ মোশাররফ হোসেনের সমর্থকদের দোকান খুলে দিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সন্ধ্যায় তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে মিল্লাত হোসেন, ওয়াসিম, ইদ্রিস মিয়া, ছেনু মিয়া, জালাল মিয়া ও নাজিম উদ্দিনসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরদিন রোববার সকালে আসাদ মিয়ার লোকজন সংগঠিত হয়ে মোশারফ হোসেনের সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। এতে উভযপক্ষের সংঘর্ষ বাধে এবং এ সংঘর্ষ পিরিজকান্দী, পীরপুর, মধ্যপাড়া ও বাজুইন্যা পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এসময় কে বা কাহারা চার-পাঁচজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে দিলে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া, বাড়ি-ঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ শুরু হয়। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। খবর পেযে রায়পুরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও বেলা বারটা পর্যন্ত ওইসব গ্রামে ঢুকতে পারেনি। বেলা সাড়ে বারটায় নরসিংদী থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রামের ভিতর ঢুকলে সংঘর্ষকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মঞ্জুর এলাহী বলেন, আসাদ মিয়া আওয়ামী লীগের না হয়েও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে এই সমস্যা হয়েছে। এই ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর নজরে আনা হয়েছে। তিনি বিষয়টি কঠোর হস্তে দমন করবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।এই ব্যাপারে কথা বলার জন্য অভিযুক্তদের কাউকে এলাকায় পায়নি সংবাদকর্মীরা। মোবাইলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।রায়পুরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম বলেন, এটি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর এলাহী ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাইজুর রহমানের পুরনা বিবাদ। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে তাদের সমর্থকরা নিয়মিত বিরতিতে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। হত্যার গুজব ছড়ানো হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো লাশের সন্ধান পায়নি। এই ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।সঞ্জিত সাহা/এমএএস/আরআইপি

Advertisement