সমগ্র সৃষ্টির উপর মানুষের প্রাধান্য বিস্তারের কারণ হচ্ছে ইলম বা জ্ঞান। এ জ্ঞানের কারণেই আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের উপর হজরত আদম আলইহিস সালামকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করে সিজদা করতে বলেছিলেন। যা ছিল আল্লাহ তাআলার কুদরাত। স্বীকৃত কথা হচ্ছে যার নিকট ইলম বা জ্ঞান থাকবে, তার শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রাধান্য সর্বদা সুপ্রতিষ্ঠিত। ইলম অর্জনের ফজিলত তুলে ধরা হলো-ক. ইলম না থাকলে আল্লাহকে ভয় করার গুণ থেকেও বঞ্চিত হতে হয়, আর আল্লাহর ভয়ই হলো নেক কাজের তাওফিক লাভে পন্থা। যার অন্তরে আল্লাহর ভয় আছে কুরআন তাদের জন্য পথপ্রদর্শক। ইলমের বরকতেই অন্তরে আল্লাহর ভয় পয়দা হয়।খ. ইমাম রাজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইলমের ৫টি ফজিলত বর্ণনা করেছেন-১. বৃষ্টি যেমন আসমান থেকে নাযিল হয়, তেমনি ইলমও আসমান থেকে অবতীর্ণ হয়।২. বৃষ্টিপাতের কারণে যেভাবে জমিন তৈরি হয়, ফলফলাদি উৎপাদনের জন্য, তেমনি ইলম অর্জনের কারণে মানুষের মনের জমিনে মানবিক গুণাবলী অর্জন সম্ভব হয়।৩. বৃষ্টিপাত ব্যতিত যেমন জমিন থেকে ফসলাদি উৎপন্ন হয় না, ঠিক ইলম ব্যতিতও মানুষ আল্লাহ তাআলা ইবাদাত-বন্দেগি করতে সক্ষম হয় না।৪. আকাশে বজ্র ধ্বনি বা বিদ্যুৎ চমকালে যেভাবে বৃষ্টিপাত হয়, তেমনিভাবে জান্নাতের আশা এবং জাহান্নামের শাস্তির ভয়ের ফলে ইলম অর্জন হয়।৫. বৃষ্টি যেমন অনেক সময় উপকারী হয় আবার অপকারী হয়, ঠিক ইলম অনুযায়ী যদি আমল করা হয় তবে তা উপকারী হয়। পক্ষান্তরে ইলম অনুযায়ী আমল না করলে তবে তা অপকারী হয়। (তাফসিরে কবির)রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে দোযখের শাস্তি থেকে নাজাত লাভকারী মানুষ দেখতে চায়, সে যেন আল্লাহ তাআলার দ্বীনের ইলম অন্বেষণকারীদের দিকে দৃষ্টিপাত করে। তিনি হলফ করে বলেন, কোনো আলেমের দরজায় যখন কোনো জ্ঞান অন্বেষণকারী জ্ঞানার্জনের জন্য যায়, তখন তার প্রত্যেক পদক্ষেপের বিনিময় একবছরের ইবাদাতের ছাওয়াব লেখা হয়। জান্নাতে তার জন্য একটি শহর তৈরি করা হয়। সে যখন জমিনে বিচরণ করে, জমিন তার জন্যে আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমাপ্রার্থনা করে এবং তার উপর সকাল-সন্ধ্যা হয় এমন অবস্থায় যে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন। ফেরেশতারা সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, তারা দোযখ থেকে নাজাত হাসিলকারী।সুতরাং আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুসলিমাকে ধর্মীয়জ্ঞানসহ সর্বপ্রকার কল্যাণের জ্ঞান অর্জন করে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এমএস
Advertisement