বিনোদন

চট্টগ্রাম পুলিশের সিনেমা ‘দামপাড়া’র শুটিং শুরু

মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন শামসুল হক। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তিনি খুলে দিয়েছিলেন অস্ত্রাগার। পরবর্তীতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তার মরদেহ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা শহীদ এই পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে এবার সিনেমা বানাচ্ছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)

Advertisement

সিনেমাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘দামপাড়া’। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) নগরের চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এলাকায় এর শুটিং শুরু হয়েছে।

এসময় সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, চলচ্চিত্র পরিচালক, সহকারী পরিচালক, শিল্পী, কলাকৌশলী এবং প্রযোজনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সিএমপির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দামপাড়া সিনেমায় শামসুল হকের চরিত্রে অভিনয় করছেন ফেরদৌস আহমেদ। আর শামসুল হকের স্ত্রী মাহমুদা হক চৌধুরীর ভূমিকায় আছেন আশনা হাবিব ভাবনা।

Advertisement

ছবির গল্প, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন আনন জামান। পরিচালনা করছেন শুদ্ধমান চৈতন।

সিএমপির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহাদাত হুসেন রাসেল জাগো নিউজকে বলেন, এই চলচ্চিত্রটি এসপি এম শামসুল হক, মুক্তিযুদ্ধকালীন চট্টগ্রাম জেলা, দামপাড়া পুলিশ লাইন্স, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ ও অন্যান্য ঐতিহাসিক ফেনোমেননের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হচ্ছে।

সিএমপির জনসংযোগ শাখা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর লালদিঘিতে পুলিশ সদরদপ্তরে স্থাপন করা হয় কন্ট্রোল রুম। সেখানে প্রতিনিয়ত জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা বৈঠকে মিলিত হতেন এবং এসপি শামসুল হকের সঙ্গে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতেন। ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম এলাকার সেনাবাহিনী, ইপিআর, পুলিশের সমন্বয়ে মুক্তিবাহিনী গঠিত হয়। ওই সময় চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেঙ্গল রেজিমেন্টের ২০০ সদস্য নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে আশ্রয় নেন।

পরে এসপি শামসুল হকের নির্দেশে রাজনৈতিক নেতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে পুলিশের অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ তুলে দেওয়া হয়। ২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ পুলিশ লাইন্সে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এরপর ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ দিবাগত রাত ভোর ৪টায় পুলিশ লাইন্সের দক্ষিণ-পূর্ব দিক এবং উত্তর-পূর্ব দিক থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী একযোগে আক্রমণ করে। যুদ্ধরত পুলিশ সদস্যরা পাহাড়ের ঢালে এবং ট্রেঞ্চে অবস্থান করায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রথম দিকে বিশেষ বেগ পেতে হয়। পরবর্তীতে ভোর ৬টার দিকে গোলাবারুদের অভাবে যুদ্ধরত পুলিশ সদস্যদের প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ে এবং তাদের একটি বড় অংশ শাহাদাৎ বরণ করেন।

Advertisement

এরপর ১৭ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এসপি শামসুল হককে গ্রেফতার করে সার্কিট হাউজে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

মিজানুর রহমান/জেডএইচ/এএসএম