মতামত

জমে উঠুক বাণিজ্য মেলা

ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হল ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। বিনোদন বঞ্চিত নগরবাসীতো বটেই দেশের বাইরে থেকেও ক্রেতারা আসেন মাসব্যাপী এই পণ্যের মেলায়। মূলত ব্যবসা-বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে এই মেলার আয়োজন করা হলেও সকল শ্রেণির মানুষের সমাগমে মেলা প্রাঙ্গণ পরিণত হয় মিলন মেলায়। এক বছর ধরে মানুষজন অপেক্ষায় থাকেন এই মেলার জন্য। গত বছর রাজনৈতিক বিরূপ পরিস্থিতির কারণে মেলা খুব বেশি জমে উঠতে পারেনি। এ বছর পরিস্থিতি যথেষ্ট অনুকূলে। তাই আশা করা যাচ্ছে মেলা জমে উঠবে। দেশি বিদেশি ক্রেতা-বিক্রেতাদের উদ্দেশ্যও সফল হবে। মেলার উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে এগিয়ে নিতে নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি এবং নতুন নতুন বাজার খোঁজার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি তার সরকারের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে নেয়া বেশ কিছু ইতিবাচক উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী  বলেন, বাংলাদেশ থেকে এখন ৭২৯টি পণ্য ১৯২টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ২০০৫-০৬ সালে দেশের রপ্তানি ছিল ১০.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা এখন ৩১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে পারলে ২০২১ সালে রপ্তানি আয় ৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশেষ একটি পণ্যের ওপর নির্ভরতার ঝুঁকি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। একটি বিশেষ পণ্য সবসময় বাজার ধরে রাখতে পারে না। উদাহরণ হিসেবে তিনি পাট ও মসলিনের এক সময়ের উজ্জ্বল অতীতের কথায়ও তুলে ধরেন।  এ জন্য পণ্যের বহুমুখী করণের ওপর জোর দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যে টিকে থাকতে হলে ক্রেতা চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করতে হবে। ঠিক রাখতে হবে মানও। খুঁজতে হবে নতুন বাজার। এছাড়া মেলায় দেশীয় পণ্য বিদেশি ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরার উদ্যোগ নিতে হবে। এর মাধ্যমে রফতানি বাড়াতে হবে। মাসব্যাপী এই মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ মোট ২২টি দেশ অংশ নিয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রবেশ মূল্য বা টিকিট মূল্য ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য থাকছে ২০ টাকা করে। মেলার শুরুতে কিছু অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে জাগো নিউজের এ সংক্রান্ত রিপোর্টে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ত্বরিৎ ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে মেলা প্রাঙ্গণকে ধুলোমুক্ত রাখতে হবে। নকল, ভেজাল ও নিন্মমানের পণ্য যাতে মেলায় বিক্রি না হতে পারে সে ব্যাপারে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালাতে হবে। নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। ক্রেতাবিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠুক এবারের বাণিজ্য মেলা-এই প্রত্যাশাও থাকলো। এইচআর/এমএস

Advertisement