জাতীয়

জিকে শামীমের সহযোগীর বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েটসের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম স্বপনের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির অভিযোগে বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা জিকে শামীমের ব্যবসায়িক অংশিদার হিসেবে পরিচিত তিনি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগীরা। এসময় বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাহায্য কামনা করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভুক্তভোগী জিয়াউর রহমান পারভেজ। তিনি বলেন, জিকে শামীমের ব্যবসায়ী পার্টনার ফজলুল করিম স্বপন কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী 'দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েট’ এর চেয়ারম্যান এবং সিইও। অসংখ্য মানুষকে পথে বসিয়ে দেওয়া পলাতক স্বপন চৌধুরী চট্টগ্রামে দুদক মামলাসহ বহু মামলার আসামি, ভুয়া ওয়ারেন্ট সিন্ডিকেটের অন্যতম সহযোগীও বটে।

জিয়াউর রহমান পারভেজ বলেন, পাওনাদের হয়রানি করতে স্বপন চৌধুরী ভুয়া ওয়ারেন্ট সিন্ডিকেটকে ব্যবহার করে থাকেন। ভুয়া ওয়ারেন্ট ইস্যু করে তিনি পুশিকেও বিভ্রান্ত করে থাকেন। সম্প্রতি আদালতের সিলমোহর জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করার অভিযোগে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে অধ্যাপক কাজী মো. আবু কাইয়ুম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। ফজলুল করিম চৌধুরী ওরফে স্বপন চৌধুরী ও তার অফিসের কর্মকর্তা কায়েছুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা করেন তিনি।

Advertisement

অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন, জিকে শামীম ও সম্রাটকে ব্যবহার করে নিজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরকারি কাজ বাগিয়ে নেন স্বপন। ওই সরকারি কাজের অনুকূলে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেন। সরকারি কাজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে বিভিন্ন কৌশলে সাব কন্টাক্টের মাধ্যমে তার কাজগুলো শুরু করেন।

তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাপ্তানবাজার প্রকল্প বাস্তবায়নে ফজলুল করিম স্বপনের সঙ্গে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। সেই চুক্তিতে বিশেষভাবে স্বপন চৌধুরী আমাদেরকে জানান- ‘এই কাজ দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। আপনারা বন্ধু মনোভাব নিয়ে কাজ সম্পন্ন করে দেন। আমার কোনো লাভের প্রয়োজন নাই, কাজটি সম্পাদন হলেই আমি উদ্ধার পাই।’ তার কথায় সরল বিশ্বাসে আমরা চার লাখ টাকা সিটি করপোরেশনে জমা দিয়ে কাজ শুরু করি। কাজটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে আমরা দ্রুত সম্পাদন করার জন্য সাইট ঠিকাদার বাচ্চুকে নিয়োগ দেই। ওই প্রকল্পে দুইজন ইঞ্জিনিয়ার (রতন ও সোহেল) স্বপন চৌধুরীর ফার্ম কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন কাজটি সম্পন্ন করার জন্য। তবে দীর্ঘ দিনেও তারা টাকা না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দেন।

জিয়াউর রহমান পারভেজ বলেন, বিভিন্নভাবে লগ্নিকারীদের পাওনা ছিল এক কোটি ৩২ লাখ চার হাজার টাকা। এর মধ্যে মাত্র ৮ লাখ টাকা দিয়েছেন স্বপন। বাকি পাওনা টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে স্বপন চৌধুরী নানাভাবে হুমকি প্রদান করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

স্বপন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেদন জানিয়ে পারভেজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছি। আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে স্বপন চৌধুরীর হাত থেকে রক্ষা পেতে ও পাওনা অর্থ আদায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ফের দাবি জানাচ্ছি।

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- এনামুজ্জামান চৌধুরী, সাইট কন্ট্রাক্টর বাচ্চু মিয়া, ইঞ্জিনিয়ার আকাশ, অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন প্রমুখ।

আরএসএম/কেএসআর/জিকেএস