বিনোদন

শুরু হচ্ছে ‘দামপাড়া’ সিনেমার শুটিং

মুক্তিযুদ্ধকালীন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন শামসুল হক। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যিনি খুলে দিয়েছিলেন অস্ত্রাগার। পরবর্তীতে পাক সেনারা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। মরদেহ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা শহীদ এ পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে এবার চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ‘দামপাড়া’ নামক নতুন এ সিনেমার শুটিংয়ের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এলাকায় প্রথম লটের শুটিং শুরুর কথা রয়েছে। ছবিতে শামসুল হক চরিত্রে অভিনয় করবেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ এবং তার বিপরীতে স্ত্রী মাহমুদা হক চৌধুরীর ভূমিকায় থাকবেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা।

সিএমপির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহাদাত হুসেন রাসেল জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ছবির শুটিং শুরুর করার কথা থাকলেও সব প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় একদিন পিছিয়ে শুক্রবার থেকে শুটিং শুরু হবে। ছবির গল্প, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন আনন জামান। পরিচালনা করছেন শুদ্ধমান চৈতন।

সিএমপির জনসংযোগ শাখা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের পর লালদীঘিতে পুলিশ সদরদপ্তরে স্থাপন করা হয় কন্ট্রোলরুম। সেখানে প্রতিনিয়ত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা বৈঠকে মিলিত হতেন এবং এসপি শামসুল হকের সঙ্গে পরিকল্পনা করতেন। ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম এলাকার সেনাবাহিনী, ইপিআর, পুলিশের সমন্বয়ে মুক্তিবাহিনী গঠিত হয়। ওইসময় চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেঙ্গল রেজিমেন্টের ২০০ সদস্য নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে আশ্রয় নেয়।

Advertisement

পরে এসপি শামসুল হকের নির্দেশে রাজনৈতিক নেতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে পুলিশের অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ তুলে দেওয়া হয়। ২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ পুলিশ লাইন্সে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। ২৯ মার্চ দিবাগত ভোর চারটার সময় পুলিশ লাইন্সের দক্ষিণ-পূর্ব দিক এবং উত্তর-পূর্ব দিক থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী একযোগে আক্রমণ করে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভারী মেশিনগান এবং থ্রি-ইঞ্চি মর্টার ব্যবহার করে। যুদ্ধরত পুলিশ সদস্যরা পাহাড়ের ঢালে এবং ট্রেঞ্চে অবস্থান করায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রথম দিকে বিশেষ বেগ পেতে হয়। পরদিন সকাল ৬টার দিকে গোলাবারুদের অভাবে যুদ্ধরত পুলিশ সদস্যদের প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে এবং পুলিশ সদস্যদের একটি বড় অংশ শাহাদাৎবরণ করেন।

এরপর ১৭ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এসপি শামসুল হককে গ্রেফতার করে সার্কিট হাউজে নিয়ে যায় এবং নির্মমভাবে হত্যা করে।

মিজানুর রহমান/এমকেআর/এএসএম

Advertisement