যুব মহিলা লীগের আলোচিত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার আলোচনা ফের সামনে এসেছে। তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাসহ চার কারণে এরই মধ্যে সংগঠনটির ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সাবেক এমপি সাবিনা আক্তার তুহিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তাকে সাংগঠনিক কাজ থেকে বিরত থাকতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার সই করা দুই পৃষ্ঠার ওই চিঠি গণমাধ্যমের হাতে আসে।
চিঠিতে প্রথম কারণ হিসেবে বলা হয়, আপনি ১৬ ডিসেম্বরে বিজয় দিবস উৎযাপন এবং শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ড করেছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাজমা আক্তারসহ অনেককে অপমান, নাজেহাল এমনকী শারীরিকভাবে আহত ও লাঞ্ছিত করেছেন। জাতির পিতার রক্তের স্মৃতি বিজড়িত ৩২ নম্বর বাড়ি আমাদের পবিত্র স্থান, আবেগ, অনুভূতির জায়গা। সুবর্ণজয়ন্তীর একটি ঐতিহাসিক দিনে আপনার ও আপনার কর্মীদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির অনেককে চোখের জল নিয়ে বাড়ি ফিরতে হলো। এর প্রকৃত এবং গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা প্রদান করুন।
দ্বিতীয় কারণ হিসেবে বলা হয়, আপনি ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই থেকে দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় সাড়ে চার বছরে কোনো থানা, ওয়ার্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলন করে কমিটি গঠন করেননি। এর ফলে দলীয় কর্মীরা পদ এবং অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। সাংগঠনিক নিয়ম মেনে আপনার দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত না করার ফলে দল সুসংগঠিত হচ্ছে না অথচ পদ আঁকড়ে আছেন। এর সুনির্দিষ্ট এবং যথাযুক্ত ব্যাখ্যা প্রদান করুন।
Advertisement
এরপরের কারণে বলা হয়েছে, নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ‘পাপিয়া’ আপনার দীর্ঘদিনের পারিবারিক বন্ধু। তার অপকর্মের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে গড়া সংগঠন যুব মহিলা লীগ দেশে-বিদেশে অনেক সমালোচনার মুখে পড়ে। আপনার বিরুদ্ধে পাপিয়াকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ আছে। এর প্রকৃত ও গ্ৰহণযোগ্য ব্যাখ্যা প্রদান করুন।
চিঠিতে শেষ কারণ হিসেবে বলা হয়, গত ১৭ ডিসেম্বর আপনি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস লিখেছেন ‘নাজমা আক্তার ১/১১ এর সময় আপনাকে কোর্ট ও সাবজেল যেতে নিষেধ করেছিল এবং নাজমা আক্তার শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে অংশ না নিয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন’। আপনার উপরোক্ত বক্তব্যের উপযুক্ত তথা-প্রমাণসহ আপনাকে হাজির করার নির্দেশ প্রদান করা হলো।
চিঠির শেষদিকে বলা হয়, এমতাবস্থায়, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও স্বার্থপরিপন্থি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার ব্যাখ্যাসহ আপনার লিখিত জবাব বুধবার (২২ ডিসেম্বর) থেকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে যুব মহিলা লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া ব্যতীত আপনাকে যুব মহিলা লীগের সব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হলো।
এসইউজে/এমআরআর/এমএস
Advertisement