স্বদেশে শতবর্ষ উৎসব পালনের বিশাল কর্মযজ্ঞের পাশাপাশি প্রবাসেও থেমে নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা। আজ সিডনিতে শত প্রদীপের আলোকশিখায়, শত প্রাণের দীপ্তিবিভায় বর্ণিল হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ হলের শতবর্ষপূর্তি উৎসব।
Advertisement
জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত অনুষ্ঠান করোনাকালীন নিষেধাজ্ঞার কারণে এ বছরের পয়লা জুলাইয়ের পরিবর্তে আজ অনুষ্ঠিত হলো। ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পয়লা জুলাই ১৯২১ সালে। একই সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয় আরও দুটি হল, ঢাকা হল (বর্তমানে শহীদুল্লাহ হল) এবং মুসলিম হল (বর্তমানে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল)-এর সঙ্গে জগন্নাথ হল।
সিডনির পশ্চিমে বর্ধিষ্ণু উপশহর ব্ল্যাকটাউন কাউন্সিলের অত্যাধুনিক হলের বিশাল পরিসরে এই বর্ণিল উৎসব আয়োজিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার সব প্রদেশ থেকে জগন্নাথ হলের প্রাক্তনীরা সপরিবারে এই উৎসবে যোগদান করেন।
এই উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে ম্যাগাজিন ‘গৌরবের একশো বছর’। এতে লিখেছেন বহু প্রথিতযশা কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষক, প্রশাসক, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ এবং জগন্নাথ হলের প্রাক্তন ছাত্র ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র, শাহ্জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
Advertisement
অনুষ্ঠানমালায় উপস্থাপিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ হলের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস; দেশ ও সমাজ গঠনে এই দুই আলোকিত প্রতিষ্ঠানের অবদান, যে বিদ্বান-গুণী-মনীষীরা এই দুই প্রতিষ্ঠানকে উজ্জ্বল করে গেছেন।
অগণিত এসব ব্যক্তিত্বের মধ্য থেকে আলোকিত হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিজ্ঞানী সত্যেন বোস, নোবেল বিজয়ী মুহম্মদ ইউনুস, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, ভাষা সৈনিক আবুল বারকাত, গণবাহিনীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা খাজা নাজিমুদ্দিন ভূঁইয়া বীর উত্তম, কবি বুদ্ধদেব বসু, বন্ধন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্র শেখর ঘোষ এবং জাতীয় দলের কৃতি ফুটবলার, অলিম্পিয়ান ও ২০০৯ সালে ক্রীড়ায় জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বাদল রায়।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রতিনিধি ও সিডনি প্রবাসী কবি ও কলামিস্ট অজয় দাশগুপ্তসহ বহু গণ্যমান্য অতিথি ও সাংবাদিক। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ হলের ইতিহাস, অবদান ও গৌরব তুলে ধরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। স্মৃতিচারণ করেন প্রাক্তনীরা, আনন্দে-গর্বে-স্মৃতিমেদুরতায়।
শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সিরাজুস সালেকীন।
Advertisement
শতবর্ষের আলোয় উত্তরোত্তর উদ্ভাসিত ও ঋদ্ধ হোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ হল, জাতির মেধা ও মনন বিকাশে আরও ভূমিকা রাখুক, সমাজ আলোকিত করার প্রত্যয়ের প্রচেষ্টা আরও বেগবান হোক- এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে শেষ হয় এই মধুর মিলনমেলা।
এমআরএম/এমএস