ভারতে কোভিড-১৯ টিকা সনদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি ব্যবহারের বিরুদ্ধে করা একটি পিটিশন খারিজ করে দিয়েছেন কেরালা হাইকোর্ট। শুধু তা-ই নয়, এমন ‘তুচ্ছ’ বিষয় নিয়ে পিটিশন করায় আবেদনকারীকে এক লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে জরিমানা দিতে না পারলে তার সম্পত্তি বেচে অর্থ সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
Advertisement
সোমবারের (২১ ডিসেম্বর) শুনানিতে বিচারপতি পি ভি কুনিকৃষ্ণন এটিকে ‘তুচ্ছ’, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ এবং ‘প্রচারণার জন্য’ পিটিশন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, কেউ বলতে পারবে না কোনো প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের কিংবা বিজেপির কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের। সাংবিধানিককভাবে কেউ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি গোটা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে যান এবং তার পদটি প্রত্যেক নাগরিকের গর্বের বিষয় হওয়া উচিত।
বিচারপতির কথায়, তারা সরকারের নীতি, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করতে পারে। তবে নাগরিকদের মনোবল বাড়ানোর বার্তাসহ প্রধানমন্ত্রীর ছবিযুক্ত টিকা সনদ বহন করতে কারও লজ্জা হওয়ার কথা নয়, বিশেষ করে মহামারি পরিস্থিতিতে।
টিকা সনদ থেকে মোদীর ছবি সরাতে পিটিশনের বিষয়ে আদালতের মন্তব্য, এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এটি কোনো উল্লেখযোগ্য পিটিশন নয়... এর উদ্দেশ্য জনকল্যাণ নয়, কেবল প্রচারণা। যখন গুরুতর সব মামলা আদালতে জমা পড়ে রয়েছে, তখন এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় পিটিশনকে উৎসাহিত করা যায় না।
Advertisement
আদালতে পিটিশনটি দায়ের করেছিলেন পিটার মায়ালিপারম্পিল নামে এক তথ্য অধিকারকর্মী। তার অভিযোগ, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে টিকা নিতে যখন জনগণকেই অর্থ দিতে হয়, তখন সেই সনদে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ছবি থাকা মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের সামিল।
তিনি আরও দাবি করেছিলেন, টিকা সনদ একান্ত ‘ব্যক্তিগত জিনিস’। এতে ব্যক্তিগত অনেক তথ্য থাকে। তাই কারও গোপনীয় জিনিসে ‘অনুপ্রবেশ’ করা অনুচিত।
তবে শুনানিতে আদালত বলেছেন, তারা টিকা সনদে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকায় কোনো সমস্যা খুঁজে পাননি।
পিটিশনকারীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে লজ্জা পান কেন? তিনি জনগণের ম্যান্ডেটে ক্ষমতায় এসেছেন... আমাদের ভিন্ন রাজনৈতিক মত থাকতে পারে, কিন্তু তারপরও তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী।
Advertisement
পিটিশনকারী অন্য কোনো দেশের টিকা সনদে প্রধানমন্ত্রীর ছবি নেই অভিযোগ করলে জবাবে আদালত বলেন, তারা তাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে গর্বিত না-ও হতে পারে। তবে আমরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে গর্বিত।
সূত্র: এনডিটিভি
কেএএ/এএসএম