জাতীয়

কেউ নিচ্ছে বস্তা ভরে কেউ ফিরছে খালি হাতে!

রাজধানীর আজিমপুর গভর্নমেন্ট কোয়ার্টারের ভেতরের মাঠ সংলগ্ন রাস্তার পাশে রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রি চলছিল। জনপ্রতি পাঁচ কেজি চাল ও আটা সংগ্রহের জন্য সকাল থেকেই সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুর দল।

Advertisement

একটু পর পর লাইন থেকে নারীদের মধ্যে কয়েকজনকে চিৎকার করে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যাচ্ছিল। তাদের অভিযোগ, অনিয়ম করে লাইন ভেঙে বিক্রেতারা চাল ও আটা সরবরাহ করছেন।

কৌতূহলবশত এগিয়ে গিয়ে চাল ও আটা সংগ্রহে সমস্যা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে অনেকেই কিছু একটা বলতে গিয়ে চুপ করে রইলেন। একজন বয়স্ক ভদ্রলোক সরাসরি না বলে একটু ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি এখানকার ডিলাররা মাঝে মধ্যেই বস্তাভর্তি চাল ও আটা পরিচিতজনদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন।’

এসময় নীরবতা ভেঙে একজন বয়স্ক নারী এগিয়ে এসে সরাসরি বললেন, ‘লাইনে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে অনেকেই চাল ও আটা পায় না। আবার কেউ দেরিতে এসেও বস্তা ভরে নিয়ে যায়।’

Advertisement

এভাবে বস্তাভর্তি করে যেন চাল-আটা বিক্রি করা না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট বিক্রেতাকে বলার জন্য তিনি এ প্রতিবেদকের মাধ্যমে অনুরোধ জানান।

এসময় নিজেকে তদারককারী পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি এসে ওই নারী মিথ্যা বলছেন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, প্রতিটি ট্রাকে তিন টন চাল ও এক টন আটা বিক্রি করেন তারা। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পণ্য বিক্রি হয়।

ওএমএসের চাল ও আটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পণ্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেকেই প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা ও আটা প্রতি কেজি ২৩ টাকা দরে কিনতে পারছেন।

সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ওএমএস ট্রাকের পণ্য বিক্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনকালে প্রতিটি ট্রাকের সামনে লম্বা লাইন দেখা যায়। রাজধানীজুড়ে বহমান ঠান্ডা বাতাস ও শীতের মধ্যেও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা থেকে শুরু করে কোলের শিশু নিয়ে অনেককে লাইনে দাঁড়াতে দেখা যায়। বিভিন্ন বিক্রয়কেন্দ্রে স্থানীয় প্রভাবশালীরা লাইন ছাড়াই বস্তাভর্তি করে পণ্য নিয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কেউ কেউ ওএমএসের চাল ও আটা সংগ্রহ করে পাড়া-মহল্লার দোকানপাটে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

Advertisement

রাজধানীর নিউমার্কেটে আবদুর রব নামে এক দিনমজুর বলেন, ‘ওএমএসের চাল ও আটা হতদরিদ্রদের বেঁচে থাকার জন্য অনেক সহায়ক। করোনাকালে ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরি হারিয়ে অনেক সচ্ছল মানুষকেও ওএমএসের পণ্য কিনতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।’

এমইউ/এমআরআর/জিকেএস