প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়ানো এক গ্রাম। গভীর জঙ্গলে যেন লুকিয়ে থাকে সেখানকার বাসিন্দারা। সেখানে ভুরিয়া প্রজাতির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বাস।
Advertisement
বর্হিবিশ্বের সঙ্গে তাদের তেমন কোনো যোগাযোগ নেই। এমনকি তারা বাইরের মানুষদেরকে পছন্দও করেন না। নিজেদের কাজ নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করেন এই উপজাতিরা।
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এই গ্রামের অবস্থান পাতাললোকে। মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা জেলায় অবস্থিত এই পাতাললোকের অবস্থান। প্রকৃতপক্ষে ভারতে এমন ১২টি গ্রাম আছে যেগুলো মাটির প্রায় ৩০০০ মিটার নীচে অবস্থিত। এতটাই গভীরে যে সেখানে সূর্যের রশ্মিও পৌঁছায় না।
এই ১২টি গ্রাম যেখানে অবস্থিত, তা পাতাললোক নামেই পরিচিত। এই স্থান প্রাকৃতিক ওষুধের ভাণ্ডার। আরও অবাক করা বিষয় হলো, এই পাতালপুরিতে ভূরিয়া উপজাতির লোকেরা বাস করে। গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দাই কুঁড়ে ঘরে থাকেন।
Advertisement
এই জায়গাটি ঘন সবুজ পাতায় ঘেরা। আছে কিছু ঔষুধি গাছ। বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদের সন্ধান মেলে এখানে। আছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও পাখির স্বর্গরাজ্য।
মধ্যপ্রদেশের এই জায়গাটি ১২০০-১৫০০ ফুটের মতো উচ্চতায় অবস্থিত। এমন স্বর্গীয় স্থানের খোঁজ অনেকেরই অজানা। বার্ড আই ভিউ দিয়ে দেখলে গোটা এলাকাটি ঘোড়ার পায়ের নালের আকারে দেখা যায়।
দুধী নদী এখানকার প্রধান ও একমাত্র পানির উত্স কেন্দ্র। এই উপত্যকার গভীরে খুব বেশি সূর্যের রশ্মি পৌঁছাতে পারে না। দুপুরের চড়া রোদেও পুরো এলাকা অন্ধকারে ঢেকে থাকে।
গভীর জঙ্গলে ভুরিয়া প্রজাতি বসবাস করেন। তারা বহির্বিশ্বের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখতে চান না। নিজেদের কাজ নিজেরাই করতে পছন্দ করেন। নিজেরাই খাদ্য তৈরি করেন। তবে গ্রাম থেকে তারা শুধু বের হন তেল-লবণ কিনতেই বাইরে বের হতে হয়।
Advertisement
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই গ্রামের সঙ্গে অনেক আগে বর্হিবিশ্বের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। সম্প্রতি গ্রামগুলোর মধ্যে দিয়ে বেশ কয়েকটি সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এই সড়কগুলোর সঙ্গে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংযুক্ত করা হয়েছে।
এই গ্রামগুলো মাটির প্রায় ৩০০০ ফুট নিচে অবস্থিত। মাত্র কয়েক বছর আগেই সেখানকার কিছু গ্রামবাসী গভীর উপত্যকা থেকে বেরিয়ে পাহাড়ের উপরের অংশে বসতি স্থাপন করেছেন।
সারাবিশ্ব যখন করোনা আতঙ্কে মুষড়ে পড়ছে, এই পাতালপুরিতে মারণ ভাইরাস আজও প্রবেশ করতে পারেনি। যা সত্যিই ওই এলাকাবাসীর জন্য আশির্বাদস্বরূপ। অনেকেই রহস্যময় এই পাতালপুরিতে ঘুরতে যান।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া/পাইপানিউজ
জেএমএস/এমএস