মতামত

হাতে বই মুখে হাসি

প্রতি বছরের মত এবারও ১ জানুয়ারি প্রাথমিক থেকে শুরু করে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হল নতুন বই। বছরের প্রথম দিনই নতুন বই হাতে পাওয়ায় শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে এক ধরনের প্রণোদনা লক্ষ করা গেছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়েছে। তাদের সেই উচ্ছ্বাস,  অভিব্যক্তি টেলিভিশনের পর্দায়, পত্রিকায় পাতাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। একটা উৎসবময় পরিবেশ ছিল সর্বত্র। এবারের পাঠ্যপুস্তক দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকে ফুলের মতো ফুটব, বর্ণমালার গরব নিয়ে আকাশ জুড়ে উঠব’। সরকার বেশ ক বছর ধরেই ১ জানুয়ারিকে পাঠ্যপুস্তক দিবস হিসেবে পালন করছে। এদিন সারাদেশের  প্রথম থেকে নবম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয়া হয় নতুন বই। এ এক বিরাট কর্মযজ্ঞ। গত বছরের হরতাল অবরোধের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের হাতে নির্ধারিত সময়েই বই তুলে দেয়া হয়। এ বছরও ১ জানুয়ারি শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনেও বই উৎসব পালন করা হয়। দেশের সব স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির চার কোটি ৪৪ লাখ ১৬ হাজার ৭২৮ জন শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয়া হয় ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭২টি নতুন বই। এ ছাড়া প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ৩২ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয়া হয় তিন কোটি ২৮ লাখ আট হাজার ৫৩টি বই ও অনুশীলন খাতা।বৃহস্পতিবার ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৮ শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে এবারের পাঠ্যপুস্তক উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার সকালে ঢাকার সরকারি ল্যাবরেটরি স্কুলে বেলুন উড়িয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক উৎসবের সূচনা করেন। তিনি বলেন, নতুন এ প্রজন্মই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।আজকের শিশুই আগামী। তাদের কে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে না পারলে জাতির ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এ জন্য প্রাথমিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়ার কোনো বিকল্প নেই। সত্যি বলতে কি শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি আমূল পরিবর্তন এসেছে। মাধ্যমিক পার না হতেই পিএসসি ও জেএসসির মত দু’টি পাবলিক পরীক্ষায় বসছে শিক্ষার্থীরা। সৃজনশীল পদ্ধতি চালু হওয়ায় মেধা যাচাইয়ের ব্যাপারেও এসেছে পরিবর্তন। ক্লাসরুমেও যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তি। এরপরও কিছু সমস্যা রয়েই গেছে। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা যায়নি। নোট ও গাইড বইয়ের দৌরাত্ম্য তো আছেই। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বইয়ের ভারে ন্যুজ থাকে এমন অভিযোগও রয়েছে। কাজেই কিছু সমস্যার কারণে সরকারের সকল মহৎ উদ্যোগ ব্যর্থ হয়ে যাবে এটি হতে পারে না। আমরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আশা করি বিষয়গুলো ভেবে দেখে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেয়া হবে। এইচআর/এমএস

Advertisement