সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের শারীরিক অসুস্থতার খবর নতুন নয়। বয়স ৮৬ বছর হয়েছে বলে কথা! এই বৃদ্ধ বয়সে খুব বেশি কাজের চাপ নিতে পারেন না তিনি। আর করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর তো প্রায় অন্তরালেই চলে গেছেন বাদশাহ সালমান। গত দু’বছরে খুব বেশি জনসম্মুখে দেখা যায়নি তাকে। এ অবস্থায় রাজশাসনের গুরুদায়িত্ব সামলাচ্ছেন মূলত তার পুত্র যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। বলা যায়, বাবার অসুস্থতায় তিনিই হয়ে উঠেছেন সৌদি আরবের ‘অঘোষিত বাদশাহ’।
Advertisement
কয়েক মাস ধরে সৌদি আরবে সব প্রেসিডেন্সিয়াল বৈঠক, রাষ্ট্রীয় অতিথিদের স্বাগত জানানোর মতো কাজগুলো করছেন যুবরাজ সালমান। এর মধ্যে সৌদি বাদশাহকে প্রকাশ্যে দেখা গেছে কালেভদ্রেই।
২০১৭ সালের জুনে সৌদি সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ঘোষণার পর থেকেই দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেতা বিবেচনা করা হয় ৩৬ বছর বয়সী যুবরাজকে। তবে কিছুদিন আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ আর উপসাগর সহযোগী সংস্থার (জিসিসি) সম্মেলনে নেতৃত্ব দেওয়ার আগে তার প্রভাব এত তীব্রভাবে কখনোই বোঝা যায়নি। বার্ষিক ওই সম্মেলনে সাধারণত বাদশাহ সালমানই নেতৃত্ব দেন। কিন্তু এ বছর তার পরিবর্তে উপস্থিত ছিলেন সৌদি যুবরাজ।
এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁর পাশে যুবরাজ সালমান। ছবি: সংগৃহীত
Advertisement
আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস’র ইয়াসমিন ফারুক বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেন, একজন ক্রাউন প্রিন্স সৌদি আরবের প্রকৃত শাসক হয়ে উঠেছেন, বিদেশি প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে বৈঠক করছেন বা শীর্ষ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন, এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে কেবল তখনই, যখন সৌদি বাদশাহদের শরীর খারাপ ছিল।
ইয়াসমিনের মতে, সৌদিতে এখন নতুন যা হচ্ছে তা হলো, বাদশাহ সালমান তার সব দায়িত্ব পালন করলেও ক্রাউন প্রিন্সের জন্য সমান্তরাল, এমনকি আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দিয়েছেন, যার জাতীয় এবং মিডিয়া গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
বাবার পাশে যুবরাজ সালমান। ছবি: সংগৃহীত
করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকে বাদশাহ সালমান লোহিত সাগরের তীরবর্তী বিলাসবহুল শহর নিওমে আবাস গড়েছেন। কোনো বিদেশি কর্মকর্তার সঙ্গে তার সবশেষ সাক্ষাৎ হয়েছিল ২০২০ সালের মার্চ মাসে, রাজধানী রিয়াদে। ওই সময় তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে দেখা হয়েছিল তার।
Advertisement
সৌদি বাদশাহ সবশেষ বিদেশ সফর করেছিলেন আরও আগে। সুলতান কাবুসের মৃত্যুতে শোক জানাতে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রতিবেশী দেশ ওমানে গিয়েছিলেন তিনি।
কেএএ/এএসএম