আগামী চার মাসের মধ্যে পাঁচ হাজার অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকে পাকা বাড়ি দিতে যাচ্ছে সরকার। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই বাড়িগুলো হস্তান্তর করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু করোনা সংকটের কারণে পিছিয়ে ২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রথম ধাপে পাঁচ হাজার পাকা বাড়ি দেওয়া হবে বলে জানা যায়।
Advertisement
চলমান ‘অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ হাজার বাসস্থান (বীর নিবাস) নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় এসব বাড়ি নির্মিত হচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রথম ধাপের পাঁচ হাজার বাড়ির ছাদ ঢালাই হয়েছে। আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন হবে মার্চের মধ্যে। যেসব মুক্তিযোদ্ধার জমি আছে তাদের জমিতে এসব ঘরের নির্মাণকাজ চলমান। প্রত্যেক উপজেলায় ৯ থেকে ১২টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। পাকা একতলা প্রতিটি বাড়ি হবে ৬৩৫ স্কয়ার ফুটের। এর মধ্যে দুটি প্রধান কক্ষ (বেডরুম), একটি অতিথি কক্ষ (ড্রয়িংরুম), একটি খাবার কক্ষ (ডাইনিংরুম), একটি রান্নাঘর ও দুটি বাথরুম থাকছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় আরও ১ হাজার ৫০০ ওয়ার্ক অর্ডার হয়েছে। এখন পুরোদমে কাজ শুরু হবে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে সারাদেশে ১৫ হাজার বীর নিবাস নির্মাণ করা হবে। করোনা সংকট কাটিয়ে প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
Advertisement
প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এম ইদ্রিস সিদ্দিকী জাগো নিউজকে বলেন, করোনা সংকটের কারণে প্রকল্পের আওতায় পাঁচ হাজার ঘর হস্তান্তর করতে পারিনি। এখন ইটসহ প্রয়োজনীয় নির্মাণসামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে। অনেক বীর নিবাসের ছাদও ঢালাই হয়ে গেছে। আশা করছি ২০২২ সালের মার্চের মধ্যেই প্রথম ধাপে পাঁচ হাজার ঘর হস্তান্তর করতে পারবো। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ১৫ হাজার। তৃতীয় ধাপে বাকি ১০ হাজার ঘর হস্তান্তর করতে পারবো।
বাংলাদেশের অসচ্ছল বীর মুক্তিযাদ্ধা/বীরাঙ্গনা/শহীদ বীর মুক্তিযাদ্ধা/প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৩০ হাজার বাসস্থান (বীর নিবাস) নির্মাণকাজ চলমান।
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে এ বাড়ি নির্মাণ শেষ করা হবে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে একটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ১৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মুক্তিযোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সারাদেশের উপজেলা এবং মহানগর পর্যায়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা বাছাই করা হচ্ছে। কমিটির সভাপতি করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- উপজেলা সমাজসেবা অফিস কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও স্থানীয় দুজন মুক্তিযোদ্ধা।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যারা অসচ্ছল তারাই এসব বাড়ি পাচ্ছেন। সারাদেশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। অসহায় এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই শেষে সরাসরি মুক্তিযোদ্ধাদের জমিতে প্রাথমিকভাবে বাড়ি নির্মাণ চলমান। সুবিধাভোগীকে বরাদ্দপ্রাপ্ত বাড়িটি শুধু নিজের বাড়ি হিসেবে ব্যবহার করবেন মর্মে চুক্তিপর্বে অঙ্গীকার করতে হবে। এ বাড়িটি কোনোভাবেই বিক্রি বা অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
Advertisement
নির্মিত বাড়িটির মূল অবকাঠামোগত কোনো পরিবর্তন-পরিবর্ধন বা ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা যাবে না। বাড়িটি সংস্কার, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় বরাদ্দপ্রাপ্ত সুবিধাভোগী নিজ খরচে বহন করবেন।
এমওএস/এএ/জেআইএম