ক্যাম্পাস

বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেবেন ঢাবির ৮ সাঁতারু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শতবর্ষের এই সময়ে বঙ্গোপসাগরের বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিতে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শিক্ষার্থী। টেকনাফ উপজেলার শাহ্পরীর দ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার সাগরপথ সাঁতরে পাড়ি দেবেন তারা।

Advertisement

আগামী ২০ ডিসেম্বর ১৬তম ফরচুন বাংলা চ্যানেল সাঁতার-২০২১ এ অংশ নেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই টিম। ষড়জ অ্যাডভেঞ্চারের আয়োজনে এবং বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সহায়তায় আয়োজিত হবে এই প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ৮০ জন সাঁতারু নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই আয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাঁতারু ডাকসুর সাবেক সদস্য সাইফুল ইসলাম রাসেলের নেতৃত্বে আগামী ১৭ ডিসেম্বর সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা হবে ঢাবির এই সাঁতারু টিম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি ৭ জন সাঁতারু হলেন– ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু তাহের, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসাইন সুজন, সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাইফুল ইসলাম তপু, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবাদুল ইসলাম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ আলী রওনক ইসলাম, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক।

Advertisement

তারা সবাই বাংলা চ্যানেল একবার করে পাড়ি দিয়েছেন। এছাড়া প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল সাঁতারে অংশগ্রহণ করছেন তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসতিয়াক উদ্দিন।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ তথ্য জানান।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দুঃসাহসিক এই সাঁতার ২০০৬ সাল থেকে আয়োজিত হয়ে আসছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৫ সাল থেকে এই সাঁতারে অংশগ্রহণ করে আসছে। পানিতে ডুবে মৃত্যু থেকে রক্ষা পেতে মানুষের সচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে এবারের আয়োজন!

আয়োজনের জন্য ঢাকায় বিচারপতি শাহবুদ্দিন পার্কের পুকুরে প্রথম এবং দ্বিতীয় বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ২৬ নভেম্বর এবং ০৩ ডিসেম্বর। ঢাকার বাইরে রংপুরে বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ৪ ডিসেম্বর। বাছাই পর্বে এক জন সাঁতারুকে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে টানা ৪ ঘণ্টা সাঁতার কেটে দেখাতে হয়।

Advertisement

এর মাধ্যমে বাছাই করে ৮০ জন সাঁতারুর নাম চূড়ান্ত করেন। এই আসরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৭২ জন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুইমিং টিমের ৮ জন সাঁতারু আগামী ২০ ডিসেম্বর সমুদ্রের সাঁতার কাটার জন্য দীর্ঘ ৫-৬ মাস কঠোর পরিশ্রম করে নিজেদের প্রস্তুত করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাঁতারু টিমের অধিনায়ক সাইফুল ইসলাম রাসেল বলেন, সমুদ্রের পথটা একটু কঠিন। সেখানে সমুদ্রের স্রোত, ঢেউ, লবণাক্ত পানি, দিক চেনার বিষয় থাকে সব মিলিয়ে এই পথ পাড়ি দেয়া চ্যালেঞ্জিং। গত বছর আমরা এই আয়োজনে চ্যাম্পিয়ন হই, আশা করছি এবারও আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালো কিছু উপহার দিতে পারবো। এই দুঃসাহসিক কাজের মাধ্যমে মানুষকে সাঁতারে প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং সাঁতার না জানার কারণে মৃত্যু হার কমানো সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এখান থেকেই একটা সময় হয়তো ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেবে। আমরা সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। যাতে দেশের জন্য কিছু অর্জন করতে পারি। যদিও এটা পাড়ি দেয়া অনেক কঠিন কিন্তু আমরা ধীরে ধীরে সেইভাবে প্রস্তুত হচ্ছি। সুইমিংপুল থেকে বের হয়ে আমরা সমুদ্রে সাঁতার কাটতে অভ্যস্ত হচ্ছি। আশা করা যায় আমরা দেশের বাইরেও বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পারবো।

টিমের আরেক সদস্য সাইফুল ইসলাম তপু বলেন, বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার যে চ্যালেঞ্জ সেটি শুধু সেন্ট মার্টিন থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত সাঁতারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমাদের মূল চ্যালেঞ্জটি শুরু হয় অনেক আগে থেকে। বাংলা চ্যানেল সাঁতারের সার্কুলার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানা ত্যাগ করা, তীব্র শীতের ভেতর পুকুর পাড়ে যাওয়া, একটু ব্যায়াম করে পুকুরের পানি সাঁতারের জন্য নামা প্রতিটি স্তরই চ্যালেঞ্জিং৷

এমআরএম/এএসএম