নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুরে ঘরে ঢুকে নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের আলোচিত মামলায় গ্রেফতার ৯ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ১০টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কারাগার থেকে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়।
নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীনের এ রায় ঘোষণা করার কথা রয়েছে।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন, নুর হোসেন বাদল, আবদুর রহিম, আবুল কালাম, ইসরাফিল হোসেন মিয়া, মাঈন উদ্দিন সাজু, সামছুদ্দিন সুম কনট্রাকটর, নুর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ ও দেলোয়ার হোসেন দেলু।
Advertisement
পলাতক আসামিরা হলেন, আবদুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, জামাল উদ্দিন ও মিজানুর রহমান তারেক।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) মামুনুর রশিদ বলেন, মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে বাদীসহ ৪০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা চায় রাষ্ট্র পক্ষ।
২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুরের দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলুসহ ১৪-১৫ জনের একদল দুর্বৃত্ত জোর করে ওই নারীর ঘরে ঢোকেন। ঘরে থাকা নারী ও তার স্বামীকে মারধর, নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা এবং পুরো ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। এর ৩২ দিন পর ৪ অক্টোবর অভিযুক্তরা ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
এরপর হামলার ভয়ে আত্মগোপনে থাকা ওই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এবং পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী। পিবিআই তদন্তে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলুসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে ঘটনায় সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পায়। যাদের মধ্যে এজাহারনামীয় আসামি আটজন আর এজাহারবহির্ভূত আসামি ছয়জন।
Advertisement
পিপি মামুনুর রশিদ আরও জানান, এ মামলায় ১৪ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযোগ গঠনের সময় মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ মেম্বারের নাম বাদ দিয়ে ১৩ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ৯ জন জেলহাজতে রয়েছেন এবং পলাতক আছেন ৪ জন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ এ মামলার আসামিদের মধ্যে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মোয়াজ্জেম হোসেন নামের এক আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে দেলওয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার সহযোগী আবুল কালামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করেন ওই নারী। চলতি বছরের ৪ অক্টোবর ধর্ষণ মামলার রায়ে দেলোয়ার ও তার সহযোগী আবুল কালামকে যাবজ্জীবন করাদণ্ড দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১।
ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/জেআইএম